নববর্ষের ১০টি সংকল্প
ডয়চে ভেলের রল্ফ রিশে নববর্ষের নানা শুভ সংকল্পের একটা নতুন – ও নিতান্তভাবে ব্যক্তিগত – ফিরিস্তি তৈরি করেছেন৷ সেটা অনুসরণ করতে পারলে নাকি আরো ভালো লোক হওয়া যায়! চেষ্টা করে দেখতে পারেন৷
১) অন্তত একটি গাছ লাগান
আইভরি কোস্টের রাজধানী আবিদজানের হাওয়া এতই দূষিত যে, পরিবেশ সংরক্ষণকারীরা নিজের হাতে গাছ লাগিয়ে শহরটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷ এটা এমন একটা কাজ, যা আমরা সকলেই করতে পারি৷
২) অন্যকে ভালোবাসা, শুধু নিজেকে নয়
ইরানে প্রতিবেশীকে ভালোবাসার একটা সুন্দর নিদর্শন দেখতে পাওয়া যাবে: কোনো বাড়ির দেওয়ালে গোটা কয়েক আঁকশি লাগানো রয়েছে, যা-তে আপনি আপনার পুরনো জামাকাপড় ঝুলিয়ে দিতে পারেন৷ যার প্রয়োজন আছে, সে নেবে; যার দেবার আছে, সে সেই ফেলে দেওয়া জামাকাপড় এখানে ঝুলিয়ে রেখে যাবে৷
৩) একটা গোটা দিন টিভি, কমপিউটার, স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবলেট ছাড়া বাঁচুন
অবশ্য যদি তা-তে প্রাণ না যায়! এ যুগে এমন অনেকে আছেন, যাঁদের কানে একটি, কোলে একটি না হলে দিন কাটে না৷
৪) কিছু মিউজিক কিনে দেখুন
তা সে ডাউনলোড, সিডি বা এলপি রেকর্ড, যাই হোক না কেন৷ অথবা কোনো গানের জলসাতেও যেতে পারেন৷ প্রসঙ্গত, ভিনাইল রেকর্ড আবার ফিরতে চলেছে, কেননা ক্রমেই আরো বেশি মানুষ আর বিশুদ্ধ ডিজিটাল মিউজিকে মজা পাচ্ছেন না৷ এলপি রেকর্ড কভারগুলোই তো ছিল এক ধরনের আর্ট!
৫) সেকালের ফ্যাশন
পুরনো জামাকাপড় ঘেঁটে দেখুন, এমন কিছু পাওয়া যায় কিনা, যা পরলে আপনাকে হঠাৎ পুরনো দিনের হিরোদের মতো দেখাবে – আবার সং-এর মতোও দেখাতে পারে৷ এই ধরুন, বাপ-ঠাকুদ্দার আমলের হিপি পোশাক-আশাক, যেন সত্তরের দশকের ‘হেয়ার’ ফিল্মের কোনো দৃশ্য৷
৬) একটা ভালো খবরের কাগজ পড়ুন
ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান, স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’ বা ফরাসি কাগজ ‘ল্য মঁদ’, সবই রাখা রয়েছে নিউজস্ট্যান্ডে৷
৭) একটা গোটা দিন কাটান কোনো প্লাস্টিকের ব্যাগ না কিনে
শুধু প্লাস্টিকের ব্যাগ কেন, প্লাস্টিকের সব ধরনের পণ্য একদিনের জন্য বর্জন করলে পরিবেশের কত উপকার হয়, সেটা ভাবতে পারেন? ধরুন প্লাস্টিকের টুথব্রাশের বদলে কাঠের হাতলের টুথব্রাশও তো ব্যবহার করা যেতে পারে...৷
৮) একদিন মাংস না খেয়ে থাকুন
অবশ্য যদি আপনি নিরামিষাশী, এমনকি ‘ভিজান’ না হন৷ ভিজানরা আবার পশুজাত কোনো কিছুই খান না, দুধ পর্যন্ত নয়৷ তাহলে ভিজানদের জন্য সংকল্পটি হবে: একদিন মাংসাশীদের জ্বালাতন না করে থাকুন তো দেখি!
৯) নিজের প্রতি সদ্ব্যবহার করুন
নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী জার্মান কথাসাহিত্যিক গ্যুন্টার গ্রাস অসাধারণ ছবি আঁকতে পারতেন, বিশেষ করে রেখাচিত্র৷ ১৯৮৫ সালে আঁকা সেল্ফপোর্ট্রেট ‘‘ধেড়ে ইঁদুর ও আমি’’ তার প্রমাণ৷ তবে নিজের প্রতি আরো কিছুটা সদয় হলে পারতেন গ্রাস!
১০) আরো কত কী করার থেকে যায়!
পরিবেশকে বাঁচাতে গেলে পশুচর্মের কোট থেকে শুরু করে কাগজের কাপ বা একবার ব্যবহারযোগ্য ‘কফি পড’, কত কিছুই তো বর্জ্জন করা যেতে পারে৷ ঐ তো, কে যেন বলছিলেন, এবারের নববর্ষে তাঁর সংকল্প হলো, নববর্ষের সংকল্পগুলোকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা...৷