আবার জনগণের রায় চান সিপ্রাস
২১ আগস্ট ২০১৫অতীতের মতো এবারও সিপ্রাস আবার সবাইকে অবাক করতে পারলেন৷ প্রথমে বামপন্থি দলের এই নেতা সংসদে আস্থা ভোটের আয়োজন করতে চেয়েছিলেন৷ তারপর তিনি সংসদের বিশেষ গ্রীষ্মকালীন অধিবেশন ডেকে ব্যয় সংকোচ কর্মসূচি অনুমোদন করানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছিলেন৷ সবার শেষে তিনি সম্ভবত স্বতঃস্ফূর্তভাবে পদত্যাগেরই সিদ্ধান্ত নিলেন৷ আচমকা মঞ্চ ত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট প্রোকোপিস পাভলোপুলস-এর ঘাড়ে দায় দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা কিছুদিন আগে পর্যন্তও অনেকের কাছে ভয়াবহ এক চিত্র মনে হয়েছিল৷
এই প্রথম প্রেসিডেন্ট নীরব রইলেন
সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব হলো, সিপ্রাসকে আরও একবার নতুন সরকার গড়ার সুযোগ দেওয়া৷ তারপর প্রয়োজন পড়লে একে একে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম দলকে সেই সুযোগ দেওয়া৷ এতেও কাজ না হলে নতুন নির্বাচন ঘোষণা করার কথা৷ সে ক্ষেত্রে চরম দক্ষিণপন্থি ‘গোল্ডেন ডন' দলও তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে সরকার গড়ার সুযোগ পেত৷
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পাভলোপুলস কেন নীরব রইলেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে৷ তিনি সংবিধানের ভিন্ন ব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়েছেন, নাকি এক মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসছে? নাকি সিরিসা দলের বিক্ষুব্ধরা বিচ্ছিন্ন হয়ে তৃতীয় বৃহত্তম দল গড়ছেন এবং সরকার গড়ার সুযোগ পাচ্ছেন? গ্রিসের রাজনৈতিক আঙিনায় অবাক করার মতো ঘটনা থাকতেই পারে না৷
কিন্তু মূল প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ সিপ্রাস কেন আবার জনগণের সমর্থন চাইছেন? এর উত্তর হলো, আর কোনো উপায় নেই৷ অনেক বামপন্থি সংসদ সদস্য আনুগত্য প্রত্যাহার করার পর সিপ্রাস দল ছাড়াই দলের নেতা হয়ে পড়েছেন৷ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করাতে তাঁকে বার বার বিরোধীদের সমর্থনের উপর নির্ভর করতে হয়েছে৷ নতুন করে নির্বাচন হলে সিপ্রাস দলের প্রার্থী তালিকায় তাঁর সমর্থকদের স্থান দিতে এবং বিরোধীদের সরিয়ে রাখতে পারবেন৷ দ্রুত নির্বাচনের আরেকটি সুবিধা হলো, বরখাস্ত হওয়া জ্বালানি মন্ত্রী লাফাজানিসকে ঘিরে দলের ব়্যাডিকাল বামপন্থিরা ঘর গুছিয়ে ব্যয় সংকোচ কর্মসূচির বিরুদ্ধে স্বঘোষিত ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গড়ার সুযোগ পাবেন না৷ বৃহস্পতিবার তিনি নির্বাচনি প্রচারের জন্য এত কম সময় নিয়ে জোরালো অভিযোগ করেছেন৷
ইতিহাস যে শিক্ষা দেয়
গ্রিসের ইতিহাসের শিক্ষা হলো, কোনো বামপন্থি দল তখনই সাফল্য পায়, যখন তারা সমাজের মধ্যপন্থিদেরও আস্থা জয় করে এবং কোনো ‘ক্যারিসম্যাটিক' নেতা এগিয়ে আসেন৷ সিপ্রাস-এর নেতৃত্বে সিরিসা পার্টি সম্ভবত সেই শর্ত পূরণ করতে পারে৷ অন্যদিকে লাফাজানিস-এর নেতৃত্বে গোষ্ঠী এখনো প্রস্তুত হয়নি৷ এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে সিপ্রাস যদি আগাম নির্বাচনে সিরিসা দলের ব়্যাডিকাল অংশকে ঝেড়ে ফেলতে পারেন, তাহলে তাঁর কৌশলগত ক্ষমতার নতুন প্রমাণ পাওয়া যাবে৷ কিন্তু সমস্যা হলো, সাত মাসের মধ্যে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ গ্রিসের কোনো আর্থিক সমস্যার সমাধান করতে পারবে না৷ বরং নতুন নির্বাচনের ফলে ব্যয়ভার আরও বেড়ে যাবে৷