ধর্ষকের শাস্তি কী?
৩১ অক্টোবর ২০১৫ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের হাই কোর্ট সম্প্রতি শিশু ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে অণ্ডকোষকে কেটে ফেলে বা অন্যভাবে অকার্যকর করে তার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছে৷ ভারতে ধর্ষণ, বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের প্রবণতা কমানোর জন্য এমন শাস্তির পক্ষে মত দিয়েছে চেন্নাইয়ের আদালত৷
এক ব্রিটিশ নাগরিকের রিট আবেদনের শুনানির সময় আদালত এই মত দেয়৷ এক স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ব্রিটেনের ওই নাগরিকের বিচার চলছে৷ মামলার আদেশে বিচারক বলেন, ‘‘শিশুদের যৌন নির্যাতনের শাস্তি নির্যাতনকারীকে খোজা করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করে দেখতে পারে৷''
চেন্নাই আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারতে শিশু নির্যাতন ৪০০ শতাংশের মতো বেড়েছে৷ দেশের কিছু ‘দানবের' পাশাপাশি বিদেশিরাও ভারতে এসে শিশুদের নির্যাতন করছে বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণে দাবি করা হয়েছে৷
এর আগে দিল্লিতে নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর অপ্রাপ্তবয়স্ক এক ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি ওঠে৷ তামিলনাড়ু রাজ্যের আদালত এবার শিশুদের যারা ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন করে তাদের খোজা করার আইন করার প্রস্তাব রাখল৷
ধর্ষনের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বা ধর্ষককে খোজা করে দেয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ চীন, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমীরাত, মিশর, ইরান, সৌদি আরব, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া, বাংলাদেশ, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আইন রয়েছে৷ তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ধর্ষককে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ আবার অনেক দেশে ধর্ষককে অণ্ডকোষ কেটে বা কৃত্রিমভাবে নিষ্ক্রিয় করে প্রজননে অক্ষম করে দেয়ারও আইন রয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রেও আছে এই আইন৷ অপরাধী স্বেচ্ছায় অণ্ডকোষ কেটে কিংবা রাসায়নিক ব্যবহার করে খোজা হতে চাইলে তার কারাবরণের মেয়াদও কমিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের আদালত৷
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের আদালত সব ধর্ষকের নয়, শুধু শিশুদের ধর্ষণকারীকে খোজা করার পক্ষে মত দিয়েছে৷ এক্ষেত্রে অপরাধের শিকারের বয়স অনুযায়ী অপরাধীর শাস্তি নির্ধারণ সম্ভব বা উচিত কিনা এই বিতর্কও নিশ্চয়ই দীর্ঘদিন চলবে৷