‘ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করা ধর্ম অবমাননা নয়’
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সোচ্চার শাম্মী হক৷ ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের একজন কর্মী তিনি৷ ইন্টারনেটে লেখালেখি করেন ‘ইস্টেশন' নামক একটি কমিউনিটি ব্লগে৷
গত ২৮শে আগস্ট ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন হক৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সম্প্রতি একের পর এক ব্লগার হত্যার ঘটনায় কিছুটা আতঙ্ক বোধ করছিলেন তিনি৷ এরই মাঝে গত ২৭শে আগস্ট দুই যুবক তাঁকে ফলো করতে শুরু করলে পুলিশের শরণাপন্ন হন তিনি৷
পুলিশ এখন শাম্মীকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছে৷ তবে ব্লগারদের একাংশ পুলিশকেও বিশ্বাস করতে রাজি নয়৷ বরং কেউ কেউ মনে করেন, এতে বরং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় কেননা পুলিশের সঙ্গে খুনিদের যোগাযোগ থাকাটা অসম্ভব নয়৷ হকও জানেন সে কথা৷ তা সত্ত্বেও পুলিশের কাছে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, তাঁকে যারা অনুসরণ করছিল, তাদের ছবি তুলে রেখেছেন তিনি৷ সেই ছবি দিয়ে পুলিশের সহায়তায় সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নিতে চেয়েছেন এই ব্লগার৷
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে চলতি বছর চারজন ব্লগার খুন হয়েছেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, মৌলবাদীরা তাদের হত্যা করেছে৷ ব্লগারদের হত্যার ক্ষেত্রে হিটলিস্ট অনুসরণ করছে খুনিরা, শোনা যাচ্ছে একথাও৷ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘কোনো কোনো ব্লগারের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ঘৃণা ছাড়ানোর এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার প্রবণতা আছে৷'' হকের কাছে এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি অবশ্য বললেন ভিন্ন কথা৷ তাঁর মতে, ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করাটা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা নয়৷ আর ধর্মও এমন কোনো ঠুনকো ব্যাপার নয় যে প্রশ্ন করলেই তার অবমাননা হবে৷
ধর্ম কিংবা ইসলামের মহানবী মোহাম্মদের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করার মধ্যে ভুল কিছু দেখেন না হক৷ এমনকি এক্ষেত্রে ফেসবুকে ‘ইভেন্ট' খুলে মহানবীকে সমালোচনা করার সপ্তাহ পালনও দোষের কিছু মনে হয় না তাঁর কাছে৷ নবীন এই ব্লগার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ এবং ইন্টারনেটে লেখালেখির নিরাপত্তা চান৷
আপনি কি শাম্মী হকের সঙ্গে একমত পোষণ করেন? আপনার মতামত জানাতে লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷