ধরাছোঁয়ার বাইরে সাকিব
ক্রিকেট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত তিন ফরম্যাটে একই সময়ে সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার কীর্তি গড়েছেন সাকিব আল হাসান৷৷ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও তৈরি করেছেন এমন রাজত্ব, যেখানে সিংহাসনের অন্য সব দাবিদার পিছিয়ে যোজন যোজন৷
মুকুটবিহীন রাজা
বিশ্বকাপে মোট আট ম্যাচে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ৷ দুই সেঞ্চুরিসহ সাকিব করেছেন ৬০৬ রান৷ এর মধ্যে সাত ইনিংসেই ৫০-এর বেশি রান করেছেন তিনি৷ এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার সাত ইনিংসে ৫০-এর বেশি রানের রেকর্ড গড়েছিলেন৷ এবার সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেললেন সাকিব৷ তাও আবার শচীনের চেয়ে তিন ম্যাচ কম খেলে! বোলিংয়েও সমান ভূমিকা রেখেছেন তিনি৷ নিয়েছেন ১১ উইকেট৷
আফগানিস্তান
টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান৷ আশা ছিল, স্পিন ঘূর্ণিতে কাবু করে বাংলাদেশকে কম রানে বেঁধে ফেলা৷ কিন্তু সাকিবের কথা হয়তো ভুলেই গিয়েছিল আফগানরা৷ বাংলাদেশের ২৬২ রানের সংগ্রহে সাকিব করেন ৫১৷ এরপর বল হাতে তার নেতৃত্বেই আফগানদের ৬২ রানে হারায় বাংলাদেশ৷
রেকর্ডের ম্যাচ
আফগানদের বিরুদ্ধে বল হাতে সাকিব করেন একাধিক রেকর্ড৷ প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে এক ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি৷ যুবরাজ সিংয়ের পর কেবল দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে একই ম্যাচে অর্ধশত ও ৫ উইকেট এখন সাকিবের৷ সেই সঙ্গে কপিল দেব ও যুবরাজ সিংয়ের পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে একই বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট পাওয়া খেলোয়াড় সাকিব৷
ভারত
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ২৮ রানে পরাজয়ের দিনে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছিল ৬৬ রান, যা অন্য সবার চেয়ে বেশি৷ বল হাতে সবচেয়ে কম ৪.১০ ইকোনমিতে উইকেট নিয়েছেন একটি৷
অস্ট্রেলিয়া
টসে জিতে ব্যাটিং নেয় অস্ট্রেলিয়া৷ ডেভিড ওয়ার্নারের বিধ্বংসী ব্য়াটিংয়ে ৩৮২ রানের লক্ষ্য দেয় অজিরা৷ ওয়ার্নার করেন ১৬৬ রান৷ সাকিব বল হাতে খুব ভালে করেননি৷ উইকেটবিহীন থেকে ৬ ওভারে দেন ৫০ রান৷ ব্যাটিংয়ে এবার টিমওয়ার্ক দেখায় টাইগাররা৷ মুশফিক শতরান করেন, অর্ধশত করেন তামিম-মাহমুদুল্লাহ৷ সাকিবও সে ম্যাচে করেন ৪১ রান৷ তবে বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ৪৮ রানে৷
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেয় বাংলাদেশ৷ লিউয়িস আর পুরানের উইকেট নেন সাকিব৷ তবে লিউয়িস-হোপের নৈপূণ্যে ক্য়ারিবীয়রা ৩২২ রানের টার্গেট দেয়৷ বল হাতে অসাধারণ সাকিব ব্যাট হাতেও কান্ডারীর ভূমিকা নেন৷ দুর্দান্ত লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজিত ১২৪ রানে বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে৷
ইংল্যান্ড
টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠান টাইগার অধিনায়ক৷ শুধু সাকিব কেনো, বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো বোলার৷ ৩৮৭ রানের টার্গেটে চাপা পড়ে বাংলাদেশ৷ তবে ব্যাটিংয়ে এসে বরাবরের মতোই নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান৷ দলকে জেতাতে না পারলেও নিজে করেন ১২১ রান৷
নিউজিল্যান্ড
টসে হেরে ব্যাটিং করতে হয় বাংলাদেশকে৷ আগের ম্যাচের দুর্দান্ত বাংলাদেশ এই ম্যাচে মুখ থুবড়ে পড়ে৷ সাকিব ৬৪ রান করলেও বাকিরা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি৷ ৪ বল বাকি থাকতেই টাইগাররা অলআউট হয়৷ ২৪৫ রানের টার্গেটেও বিপদে পড়ে কিউইরা৷ গাপটিল ও মুনরোকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে মাঠে রাখেন সাকিব৷ আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে হারে বাংলাদেশ৷
সাউথ আফ্রিকা
২ জুন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে৷ টস জিতে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠায় সাউথ আফ্রিকা৷ মুশফিকের সঙ্গে মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪২ রানের পার্টনারশিপ করেন সাকিব৷ তাঁর ব্যক্তিগত ৭৫ রান দলকে এনে দেয় ৩৩০ রানের বিশাল সংগ্রহ৷ বোলিংয়ে এসে প্রোটিয়া ওপেনার মারক্রামকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি৷ ম্যাচটি ২১ রানে জেতে বাংলাদেশ৷