প্রতিদিন ২৪ শিশু ধর্ষণের শিকার!
২০ জুন ২০১৩সম্প্রতি রাজধানী দিল্লিতে পাঁচ বছরের একটি শিশু পাশবিক যৌন নির্যাতনের শিকার হলে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঢল নামে৷ অপরাধীকে কঠোরতম শাস্তির দেবার দাবি জানানো হয়৷ জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান তুলে এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস-এর রিপোর্টে বলা হয়, গত দশ বছরে শিশু ও নাবালিকা ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের ৪৮৩৩৮টি ঘটনা ঘটে৷ গত বছর, অর্থাৎ ২০১২ সালেই ঘটেছে শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের মোট ৮৫৪১টি ঘটনা৷ তার মানে দৈনিক গড়ে অন্তত ২৪টি শিশু যৌন নিগ্রহের শিকার হচ্ছে৷ এরকম ঘটনা সবথেকে বেশি হয়েছে মিজোরামে৷ এছাড়া, সাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা তো আলাদা৷
এই তালিকার শীর্ষে আছে মধ্যপ্রদেশে ৯৪৬৫টি, মহারাষ্ট্রে ৬৮৬৮টি, উত্তরপ্রদেশে ৫৯৪৯টি এবং দিল্লিতে ৩০০০টি৷ অবশ্য এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়ামাত্র৷ নাবালিকা বা শিশুর ওপর যৌন হেনস্থার অনেক বেশি ঘটনা পরিবারের মধ্যেই চেপে রাখা হয় নানা কারণে৷ এইভাবে প্রতিদিন অসংখ্য পরিবারে বা পারিপার্শ্বিকে বিকৃত যৌন নির্যাতনে হারিয়ে যেতে থাকা শৈশবের কথা গোপনই থেকে যায়৷ এই ধরণের ঘটনা পুলিশের কাছে আদৌ পৌঁছোয় না, মনে করেন এসিএইচআর-এর অধিকর্তা৷ তার ওপর ধর্ষণের পর খুনের ঘটনাও আতঙ্কজনক৷ গত বছর এ সংখ্যা প্রায় ১৬০০, যার মধ্যে উত্তরপ্রদেশেই খুন হয় ৪৫০ জন নাবালিকা৷
পাঁচ বছরের যে শিশুটিকে কিছুদিন আগে দিল্লিতে ধর্ষণ করে ৪৮ ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছিল, তার মা-বাবাকে পুলিশ থানায় হয়রানি করায় এবং ডাইরি নিতে গড়িমসি করার অভিযোগে দিল্লির শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন কৈফিয়ত তলব করেছেন দিল্লি পুলিশের কাছে৷ অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সে চিকিৎসাধীন শিশুটির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়মিত দেবার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নোটিশও দিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন৷
সমাজবিদদের মতে, শিশুরাই বিকৃতকাম মানুষের সহজ শিকার৷ সারল্যের সুযোগ নিয়ে তাদের সহজে ভোলানো যায়৷ প্রথমত তারা বুঝতে পারে না৷ আর বুঝলেও প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করতে জানে না৷ এজন্য আগাম সতর্কতার দায়িত্ব নিতে হবে অভিভাবকদের এবং স্কুল শিক্ষকদের৷ গল্পচ্ছলে শিশুদের এ বিষয়ে কিছুটা ধারণা গড়ে তোলাও যেতে পারে৷ কোনো আত্মীয় বা পরিচিত ব্যক্তির আচরণ অস্বস্তিকর ঠেকলে, তা যেন বাড়িতে মা-বাবাকে জানায় তারা, বলছেন সমাজবিদরা৷