দুর্নীতি-বিরোধী অভিযান হোঁচট খেল শুরুতেই
২১ এপ্রিল ২০১১ভারতের মত বিশাল দেশে যেখানে ১২০ কোটি মানুষের বাস, সেই দেশের জনজীবন থেকে দুর্নীতি-বিরোধী অভিযান যে সহজ নয় তা আন্দাজ করতে পেরেছিল অনেকেই৷ সমাজ কর্মী আন্না হাজারের আমৃত্যু অনশনের পঞ্চম দিনে সরকার জনসাধারণের দাবি মেনে রাজি হয় লোকপাল বিলের নতুন খসড়া রচনার জন্য সরকার ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনেদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠনে৷ এই কমিটির কো-চেয়ারম্যান হন নাগরিক সমাজের তরফে বিশিষ্ট আইনজীবী শান্তিভূষণ এবং সদস্য হিসেবে থাকেন তাঁর ছেলে প্রশান্ত ভূষণ৷
কিন্তু পিতা-পুত্রের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক মহল থেকে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাতে শুরুতেই দুর্নীতি বিরোধী আইনের খসড়া রচনার কাজ বেলাইন হবার উপক্রম৷ বিতর্ক প্রথমে শুরু হয়েছে ২০০৬ সালের একটি সিডি নিয়ে৷ তাতে ছিল সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন নেতা অমর সিং এবং দলের সভাপতি মুলায়েম সিং-এর সঙ্গে শান্তিভূষণের টেলিফোনে কথোপকথনের রেকর্ড৷ তাতে নাকি দলত্যাগ বিরোধী আইনি মামলা প্রসঙ্গে শান্তিভূষণ বিচারকদের প্রভাবিত করার কথা বলেছিলেন৷
এর সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে শান্তিভূষণ বলেন, ঐ সিডি বিকৃত ও খণ্ডিত৷একটি বেসরকারি টেস্ট ল্যাবরেটরির রিপোর্ট পেশ করে একথা বলেন তিনি৷ কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে তা পরীক্ষা করে বলা হয়, ঐ সিডি অবিকৃত এবং অখণ্ড৷ অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং প্রশ্ন তুলেছেন, শান্তিভূষণ পরিবার উত্তরপ্রদেশের মায়াবতি সরকারের কাছ থেকে কমদামে জমি নিয়েছেন৷ এটাকে বিশেষ সুবিধা নেয়া বলে কংগ্রেস নেতার অভিযোগ৷
এহ বাহ্য, লোকপাল বিলের খসড়া কমিটি গঠনের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট৷সরকারের কাছে জবাব চেয়েছেন কিসের ভিত্তিতে এই কমিটি গঠিত হলো৷ এটা সংবিধান বহির্ভূত৷ আইন প্রণয়নে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণের কোন সাংবিধানিক বৈধতা নেই৷
এই পরিস্থিতিতে নাগরিক কমিটি থেকে তাঁরা পদত্যাগ করবেন কিনা সে প্রসঙ্গে নাগরিক কমিটির অন্যতম সদস্য অরবিন্দ কেজরিয়াল সংবাদ মাধ্যমকে আজ বলেন, দুর্নীতি-বিরোধী অভিযানকে বানচাল করতে নাগরিক কমিটির সদস্যদের দিকে কাদা ছুঁড়ছে স্বার্থান্বেষী মহল৷ নাগরিক কমিটির কোন সদস্য সেজন্য পদত্যাগ করবেন না৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক