ঘড়িয়ালের মিলন ঘটানোর চেষ্টা
১৪ আগস্ট ২০১৭একটি ৩৬ বছর বয়সি স্ত্রী ঘড়িয়ালকে রাজশাহীর চিড়িয়াখানা থেকে ঢাকায় আনা হয়েছে, যাতে সে পুরুষ ঘড়িয়ালের সান্নিধ্য পায়৷ রাজশাহীর চিড়িয়াখানায় আরো একটি স্ত্রী ঘড়িয়াল থাকলেও কোনো পুরুষ ছিল না৷ অথচ একসময় বাংলাদেশের নদীতে নিয়মিতই দেখা যেতে অসংখ্য ঘড়িয়াল৷
একইসঙ্গে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে একটি ৪০ বছর বয়সি পুরুষ কুমির বা ঘড়িয়ালকে পাঠানো হয়েছে রাজশাহীতে৷ পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা আশা করছেন, এভাবে স্ত্রী ও পুরুষ ঘাড়িয়ালের মধ্যে মিলন ঘটানো সম্ভব হবে৷ ঘড়িয়ালরা সাধারণত ৫০ বছর বয়স অবধি প্রজননক্ষম থাকে৷ এই প্রাণীটি বিলুপ্তপ্রায় হয়ে যাওয়ায় সংরক্ষণবিদরা উদ্যোগী হয়েছেন সেটির প্রজনন বাড়ানোর৷ প্রাকৃতিকভাবে প্রাণিটির সংখ্যা বৃদ্ধির কোনো ইঙ্গিত এখন আর দেখা যাচ্ছে না৷
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন আইইউসিএন-এর বাংলাদেশ প্রধান সরওয়ার আলম এই বিষয়ে বলেন, ‘‘বিলুপ্তপ্রায় ঘড়িয়ালকে পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে এটাই আমাদের শেষ আশা৷ আমরা আশা করছি, আমরা এর ফল পাবো৷ তবে বর্ষিয়ান ঘাড়িয়ালগুলো হয়ত আর মিলনে আগ্রহী নাও হতে পারে৷''
প্রসঙ্গত, নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীতে একসময় ঘড়িয়ালের বিচরণ ছিল৷ বড় দেহ এবং লম্বা সরু নাকের জন্য এই কুমির বিশেষ প্রসিদ্ধ৷ কিন্তু এখন এগুলো বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায়৷ কখনো কখনো যে দু-একটি দেখা যায়, সেগুলো ভারত থেকে পানির স্রোতে বাংলাদেশে পৌঁছায় বলে ধারণা করা হয়৷
পরিবেশবাদীরা বলছেন, পাকিস্তান এবং ভুটান থেকেঘড়িয়াল পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে৷ মূলত ভারতে এবং নেপালে এখন দু'শোর মতো এই প্রাণী রয়েছে৷ আর বাংলাদেশি বন্দি অবস্থায় আছে ১১টি ঘড়িয়াল৷ ফলে দেশটিতে ঘড়িয়ালের সংখ্যা বাড়াতে এখন এগুলোই মূল ভরসা৷ বাংলাদেশের সরকারি বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা জাহিদুল কবির এই বিষয়ে বলেন, ‘‘ঘড়িয়ালের বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রথম আমরা চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে তাদের অদলবদল করছি, যাতে তারা বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ও মিলতে পারে৷''
চিড়িয়াখানায় ঘড়িয়ালদের নতুন বাচ্চা জন্ম নিলে সেগুলো বাংলাদেশের যেসব নদীতে তারা আগে ছিল, সেসব নদীতে ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন পরিবেশবাদীরা৷ প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের এই উদ্যোগ কি সাফল্যের মুখ দেখবে? নাকি অনেক দেরি হয়ে গেছে?
এআই/ডিজি (এএফপি)