দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতা অনুষ্ঠানে হাজির বশির
৯ জুলাই ২০১১রাজধানী জুবাতে আজ নেমেছিল জনতার ঢল৷ রাত ১২টার পর থেকেই রাস্তায় নেমে আসে জনতা৷ স্বাধীনতার প্রথম প্রহরটি তারা স্মরণীয় করে রাখে৷ এরপর সকালে শুরু হয় স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিকতা৷ প্রথমে নিরাপত্তা বাহিনী জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলেও পরে হাল ছেড়ে দেয়৷ স্বতঃস্ফূর্ত জনতার মিছিল গিয়ে এক হয় জুবার সেই জায়গাটিতে যেখানে সদ্য স্বাধীন দেশটির পতাকা পতপত করে উড়ছে৷
এতদিন এক দেশ ছিল, কিন্তু আজ থেকে ভিন্ন দেশ, ভিন্ন পরিচয়৷ তবে দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার কয়েক ঘন্টা আগেই তাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সুদান৷ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ বজায় রাখার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত৷ তার ওপর জুবার এই স্বাধীনতার ঘোষণার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির৷
তবে বশিরের এই উপস্থিতি পশ্চিমা অনেক নেতৃবৃন্দকেই যে অস্বস্তিতে ফেলেছে তা বলা বাহুল্য৷ বিশেষ করে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে৷ কারণ এই বশিরের বিরুদ্ধে এখন আন্তর্জাতিক আদালতের হুলিয়া ঝুলছে, যার কারণে দক্ষিণ সুদানের অস্তিত্বকে মেনে নিতে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বশিরকে৷ অন্যদিকে এক তৃতীয়াংশ হারানোর পরও সুদানের ভবিষ্যত নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব৷ শুক্রবার এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমি জানি বিচ্ছিন্নতা মেনে নেওয়া কষ্টকর, সেটা আবেগ, অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক দিক থেকে৷ তবে আমি মনে করি সুদানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল এবং তারা এই অঞ্চলে নেতৃত্ব দেবে৷ যদিও উত্তর এবং দক্ষিণ সুদানের লোকজন আলাদা বাস করবে, তবে তাদের ভবিষ্যত পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত৷
আলাদা হয়ে যাওয়ার পরও এখনও অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে নতুন রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদানকে৷ এই অঞ্চলের তিন চতুর্থাংশ খনিজ তেল দক্ষিণে অবস্থিত৷ দুই পক্ষের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণ ছাড়াও এই তেলের ভাগাভাগি নির্ধারণ একটি বড় বিষয়৷ এছাড়া বহুদিন ধরে বঞ্চিত এবং অনগ্রসর হয়ে থাকা দক্ষিণ সুদানকে গড়ে তোলাটা এখন নতুন প্রেসিডেন্ট সালভা কিরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ৷
তবে আন্তর্জাতিক মহলকে এই ক্ষেত্রে পাশেই পাচ্ছে দক্ষিণ সুদান৷ ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি সহ অনেক দেশের স্বীকৃতি মিলেছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শনিবার এক বার্তায় জানিয়েছেন, দক্ষিণ সুদানের উন্নতির জন্য তাকে সহায়তা করবে মার্কিন প্রশাসন৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম