ত্রিপোলিতে পরপর বিস্ফোরণ, ব্রেগায় বিদ্রোহীরা সমস্যায়
১৭ জুলাই ২০১১গভীর রাতে একের পর এক বিস্ফোরণ
রাজধানী ত্রিপোলি শনিবার মাঝরাতের পর থেকে একের পর এক বড়সড় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে৷ স্থানীয় সময় রাত একটার আগে পরে সব মিলিয়ে অন্তত ১৩টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে জানাচ্ছে সংবাদসংস্থা এএফপি৷ তবে ওই সূত্রে জানানো হয়নি এই বিস্ফোরণের লক্ষ্য কে বা কারা ছিল৷ লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এই বিস্ফোরণের খবর দিয়ে জানায়, রাজধানীর উপনিবেশবাদী শত্রুরা রাজধানীর পূর্বাঞ্চলের এইন জারা এলাকায় বসতি অঞ্চলে এবং সেনা স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে৷ এই দাবি মেনে নিলে এই সিরিয়াল বিস্ফোরণ বিদ্রোহীরাই ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা যেতে পারে৷
গাদ্দাফির ভাষণের প্রতিক্রিয়াতেই এই হামলা
গতকাল রাজধানীর পশ্চিম দিকে জাওয়াইয়াতে নিজের সমর্থকদের এক জমায়েতে মাইকের মাধ্যমে প্রচারিত ভাষণে লিবিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মার গাদ্দাফি বলেছেন, ‘আমাকে দেশত্যাগ করতে বলা হচ্ছে৷ ব্যাপারটা রীতিমত হাস্যকর৷ আমার পূর্বপুরুষদের এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই যাব না৷ যারা আমার জন্য নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, দেশ ছেড়ে পালালে তাদেরও অসম্মান করা হবে৷' গাদ্দাফির বক্তব্য, দেশের জন্য তিনি প্রাণ দিতে প্রস্তুত৷ নাটোবাহিনীর ব্রিটিশ এবং ইটালিয়ানদের সাম্রাজ্যবাদী বলে উল্লেখ করে গাদ্দাফির আরও বক্তব্য, ইঁদুরের মত ওরা মিসুরাটা, বেনগাজি আর পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকার মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে৷ বিদ্রোহীদেরকে গাদ্দাফি ইঁদুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ একথাও বলেছেন, আদেশ দেওয়ামাত্র পাঁচ মিলিয়ন সশস্ত্র লিবিয়ান প্যারেড করে গিয়ে এইসব বিদ্রোহীদের খতম করতে পারে৷ শুধুমাত্র আদেশের অপেক্ষা তাদের৷
বিদ্রোহীদের জন্য শনিবার দিনটা ছিল বেশ ক্ষতির
লিবিয়ার তৈলবন্দর ব্রেগায় গাদ্দাফিবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সম্মুখসমরে অন্তত দশজন বিদ্রোহী মারা পড়েছে শনিবার৷ লড়াইয়ে ১৭২ জন বিদ্রোহী সেনা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ অন্যদিকে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে গাদ্দাফির সেনাকে বেশ অনেকদূর পর্যন্ত হটিয়ে দিতে পেরেছে বিদ্রোহীরা৷ পাশাপাশি, লিবিয়ার বিদ্রোহীদেরই সে দেশের প্রকৃত শাসক বলে স্বীকৃতি দিয়েছে পশ্চিম বিশ্ব এবং আরব দুনিয়াও৷ কিন্তু, লিবিয়ার অভ্যন্তরে এমন খবরও শোনা যাচ্ছে যে, মুয়াম্মার গাদ্দাফি এই অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে আলোচনায় বসতে আগ্রহী৷ তবে এই সংবাদের কোন নিশ্চয়তা শোনা যায়নি গাদ্দাফির ভাষণে শনিবার৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী