ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ১৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
২৩ আগস্ট ২০২৪বন্যা ও ভূমিধসের ফলে ১৯ জন মারা গেছেন। রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ১৭ লাখ মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাড়ে চারশ ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ৬৫ হাজার ৪০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এখনো পর্যন্ত বিদ্যুতের ৮৪৪টি খুঁটি ভেঙে গেছে, ১৫১টি ট্রান্সফর্মার , দুইটি সাবস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে রাজ্যের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই।
রাজস্ব সচিব বলেছেন, ত্রিপুরা রাজ্যে দুই হাজার ৩২টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এক হাজার ৯৫২টি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গেছে, ১৫৩টি ড্রেজার কাজ করছে। দুইশ জন ইঞ্জিনিয়র দিন-রাত কাজ করে চলেছেন। এক লাখ ২০ বাজার হেক্টর ধানের জমি ও পাঁচ হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেত জলের তলায় চলে গেছে।
রাজ্যের সব স্কুল অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি দেয়া হয়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকায় টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিমান বাহিনীর সাহায্য
ভারতীয় বিমান বাহিনী দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের পৌঁছানোর কাজ করছে। বিমান বাহিনীর দুইটি সি-১৩০ বিমান ও একটি এএন-৩২ বিমানকে কাজে লাগানো হয়েছে। এই বিমানে করেই আগরতলায় কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এনডিআরএফের চারটি দলকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া প্রচুর ত্রাণসামগ্রীও নিয়ে এসেছে বিমানগুলি।
স্বরাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৬টি দল বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের কাজ করছে।
রাজ্য সরকারের অনুরোধ মেনে উপদ্রুত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দুইটি হেলিকপ্টার দিয়েছে।
আগরতলাতেও বন্যা
আগরতলা শহরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান জল জমেছে। শহরের ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মেয়র দীপক মজুমদার বলেছেন, নদীর জল প্রবেশের ফলে শহর প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি না হলে এই জল এবার নেমে যাবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন।
আরো বৃষ্টির আশঙ্কা
রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে আবহাওয়াবিদ পার্থ রায়কে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবারও প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। তাই দক্ষিণ ত্রিপুরা, সিপাহীজলা, গোমতী ও ধলাই জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
রাজস্ব সচিব জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ ত্রিপুরার বকাফায় ৪৯৩ দশমিক ছয় মিলিমিটার, সিপাহীজলা জেলায় সোনামুড়ায় ২৯৩ দশমিক চার, আগরতলায় ২৩৩ এবং গোমতী জেলার উদয়পুরে ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, এএনআই)