ইদলিব প্রদেশে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮সিরিয়ার ভূখণ্ডের অনেকটা অংশই প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে৷ বিদ্রোহীদের দখলে রয়ে গেছে মূলত ইদলিব প্রদেশ৷ অন্যান্য জায়গা থেকে বিতাড়িত বিদ্রোহী ও নিরীহ মানুষও সেখানে আশ্রয় নিয়েছে৷ ইদলিবের পতন ঘটলে সিরিয়ায় আসাদের কর্তৃত্ব জোরদার হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ এবার সেই এলাকাও দখল করতে চান৷ সেই লক্ষ্যে সমরসজ্জাও শুরু হয়ে গেছে৷ রুশ বোমারু বিমান সেখানে কিছু হামলাও চালিয়েছে৷ বিদ্রোহীরা প্রতিরোধ করলে মারাত্মক সংঘাত ও তার ফলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্দেশ্যে ইরানের রাজধানী তেহরানে মিলিত হচ্ছেন সিরিয়া সংকটে জড়িত বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক শক্তির শীর্ষ প্রতিনিধিরা৷ শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন৷ ‘আস্তানা প্রক্রিয়া' নামের কাঠামোর আওতায় এই তিনটি দেশ সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা আনতে চুক্তিবদ্ধ৷
২০১৫ সালে বিদ্রোহীরা ইদলিব প্রদেশের একটা বড় অংশ দখল করে৷ এই মুহূর্তে প্রায় ৬০ শতাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ তুরস্ক তার সীমান্তের কাছেই এই ‘জিহাদি' গোষ্ঠীগুলিকে কিছুটা মদত করে সীমিত প্রভাব বিস্তার করেছে৷ সেখানে তুরস্ক ১২টি সামরিক ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র' স্থাপন করেছে৷ ফলে তুরস্ক সংঘাত এড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে রাশিয়া ও ইরান আশা করছে৷ সংঘাত ঘটলে অসংখ্য শরণার্থীকে বাধ্য হয়ে তুরস্কেই আশ্রয় নিতে হবে৷ তাই নিজস্ব স্বার্থেই তুরস্ক এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে চলবে, এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ তুরস্ক অবশ্য এখনো এ বিষয়ে নমনীয়তা দেখাচ্ছে না৷ তেহরান শীর্য সম্মেলন ব্যর্থ হলে আসাদ বাহিনী অবিলম্বে ইদলিব প্রদেশে অভিযান শুরু করার ইঙ্গিত দিয়েছে৷
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আসাদবিরোধী সব সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের উল্লেখ করেছেন৷ তবে তিনি বলেন, আসাদবিরোধী বাহিনী ও ‘সন্ত্রাসবাদী'-দের আলাদা করার উদ্যোগ চলছে৷ আসাদ বাহিনী ও রাশিয়ার মূল লক্ষ্য হবে আল কায়েদার প্রাক্তন সিরীয় শাখার নেতৃত্বে জিহাদি জোট ‘হায়াৎ তাহরির আল-শাম'৷
আন্তর্জাতিক সংকট গোষ্ঠী ইদলিব প্রদেশে আসাদ বাহিনীর সামরিক অভিযানের সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে৷ আলোচনার মাধ্যমেই সংকট এড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে এই গোষ্ঠী৷ মস্কো আন্তর্জাতিক মঞ্চে আসাদ প্রশাসনকে আবার প্রতিষ্ঠা করার যে উদ্যোগ নিচ্ছে, সামরিক অভিযান শুরু হলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে তারা৷ তাছাড়া সে ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নও সিরিয়ার পুনর্গঠনে কোনো মদত করবে না৷ এমন পরিস্থিতিতে সব পক্ষেরই শান্তিপূর্ণ সমাধানসূত্রের পথে এগোনো উচিত বলে মনে করছে একাধিক আন্তর্জাতিক শক্তি ও সংগঠন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও রাশিয়াকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন৷