তুষারধস
৭ এপ্রিল ২০১২পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আতহার আব্বাস জানিয়েছেন, শনিবার ভোরের দিকে তুষারধসের ঘটনা ঘটে৷ ফলে অনেক সেনা সদস্য ঘুমন্ত অবস্থায়ই তুষারধসে চাপা পড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এতে নর্দার্ন লাইট ইনফ্যান্ট্রি - এনএলআই-এর একশ'রও বেশি সেনা সদস্য এবং একজন কর্নেল প্রাণ হারিয়েছেন৷ মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চাপা পড়া সেনার সংখ্যা ১১৭ জন৷ প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও উচ্চ ঘ্রাণশক্তি সম্পন্ন কুকুর এবং হেলিকপ্টার নিয়ে সেনাবাহিনীর বিশেষ দল উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷
উল্লেখ্য, ৬৩০০ মিটার উঁচু সিয়াচেন সীমান্ত এলাকায় ১৯৮৪ সাল থেকে ভারত ও পাকিস্তানের প্রায় ১০ হাজার সৈন্য মোতায়েন রয়েছে৷ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর অঞ্চলে নিজেদের দখল বজায় রাখতে দুই দফা যুদ্ধ করেছে৷ ১৯৮৪ সালে ভারত প্রথম সিয়াচেন অঞ্চলে সৈন্য পাঠিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো দখল করে নেয়৷ এর পরপরই পাকিস্তানও সেখানে সেনা মোতায়েন করে৷ উভয়পক্ষের মধ্যে ১৯৮৭ সালে ভীষণ যুদ্ধ হয়৷ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ২০০৪ সালে পাকিস্তান ও ভারত সেখানে শান্তি প্রক্রিয়ায় ঐকমত্যে আসে৷ সেই থেকে সিয়াচেনে দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে আর যুদ্ধ হয়নি৷
তবে শীতকালে সেখানে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে তুষার ঝড় হয়ে থাকে৷ তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সিয়াচেন অঞ্চলের খারাপ আবহাওয়া এবং তুষারধসের ফলে যতো সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে তা যুদ্ধে হতাহতের চেয়েও বেশি৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও কাশ্মীরের পাহাড়ি এলাকায় টহলরত অবস্থায় তুষারধসের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ১৬ জন ভারতীয় সৈন্য৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, (এএফপি, রয়টার্স)
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম