তুরস্কে বিস্ফোরণ, সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ
৪ নভেম্বর ২০১৬তুরস্কের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের দিয়ারবকির এলাকাটি কুর্দি অধ্যুষিত৷ শুক্রবারের এই বিস্ফোরণের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে একাধিক গণমাধ্যম৷ এমনকি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে থানার ভবনটির সব জানালার কাঁচ ভেঙে রাস্তায় ছড়িয়ে আছে৷
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ তারা কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শুনতে পেয়েছেন৷ দিয়ারবকিরের সরকারি অফিস এই ঘটনার জন্য কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি পিকেকে কে দায়ী করেছে৷ থানার পাশে একটি গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা৷ কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, ঐ হামলায় পুলিশ এবং বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে৷ এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে কুর্দি সমর্থিত পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (এইচডিপি) কয়েকজন আইন প্রণেতাকে আটক করে পুলিশ৷ তাদের বিরুদ্ধে পিকেকে-কে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে৷
পিকেকে প্রচারণা ছড়ানো
এইচডিপি-র দুই নেতা সেলাহাতিন দেমিত্রাস এবং ফিগেন ইয়ুকসেকদাগকে ভোর বেলা তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়৷
তুরস্কের বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি জানিয়েছে, এই দুই নেতার বিরুদ্ধে পিকেকে-র সমর্থনে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে৷ অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, ২০১৪ সালের অক্টোবরে সহিংস বিক্ষোভ ছড়ানোর পেছনে তাদের হাত রয়েছে, এই অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে৷
তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এইচডিপি৷ জুলাইতে অভ্যুত্থান চেষ্টার পর থেকে এই দলটির নেতা-কর্মীদের উপর দমন-পীড়ন অব্যাহত আছে৷ পার্লামেন্টে ৫৯টি আসন এই দলের দখলে৷
দলটির নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েকশ' মামলা হয়েছে৷ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দিচ্ছে৷ এছাড়া অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দিয়াবকিরের নির্বাচিত মেয়রকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অপসারণ করা হয়েছে৷
শুক্রবারে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জানিয়েছেন, ‘‘ইইউ এ নেতাদের আটক করার বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন৷''
এইচডিপি-র নেতাদের আটক করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হলে শুক্রবার সকালেই বন্ধ করে দেয়া হয় টুইটার ও হোয়াটস অ্যাপ৷
শুক্রবার ‘টার্কি ব্লকস' নামের দেশটির একটি ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক দল জানায়, ১১ জন কুর্দিপন্থি আইনপ্রণেতাকে আটকের জের ধরে এমনটা করা হয়েছে৷
‘থ্রোটলিং'-এর মাধ্যমে এই অ্যাকসেস বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই পর্যবেক্ষক দলের একজন বিশেষজ্ঞ৷ ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় নেটের গতি কমিয়ে দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার ব্যাহত করার প্রক্রিয়াকে ‘থ্রোটলিং' বলা হয়৷ এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া যায়৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)