তুরস্কে দুইশ'রও বেশি গান নিষিদ্ধ
৬ মার্চ ২০১৮২০১০ সালে কুর্দি সংগীতশিল্পী রোজদাকে এক বছর ৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয় গান গাওয়ার অপরাধে৷ অভিযোগে বলা হয়েছিল, কুর্দি শহর দিয়ারবাকিরের সংস্কৃতি উৎসবে তাঁর গাওয়া গানগুলো ছিল ‘সন্ত্রাসের পক্ষে প্রচারণা'৷ ৮ বছর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই গায়িকা জানলেন, একই অভিযোগে তাঁর তিনটি গানের উপর আবারও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ অথচ রোজদা জানালেন, তিনটি গানের বিষয়ই শান্তির পক্ষে প্রচারণা৷
২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত তুর্কি রেডিও ও টেলিভিশন কর্পোরেশন টিআরটি মোট ২০৮টি গান নিষিদ্ধ করেছে, যার মধ্যে ৬৬টি কুর্দি ভাষায়৷ তবে বিরোধী দল সিএইচপি'র এক প্রতিনিধি এই ঘটনার তদন্ত দাবি করার পর জনগণ এ সম্পর্কে জানতে পারে৷ রোজদা যখন তালিকাটি দেখলেন, তখন তিনি কিন্তু বিস্মিত হননি৷ ডয়চে ভেলেকে এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, এমন ঘটনা তাঁর সাথে এই প্রথম নয়৷
নিষিদ্ধ হওয়া তাঁর গানগুলো ২০০৭ সালে প্রকাশ পেয়েছিল এবং সেই সময় টিআরটি রেডিও ও টেলিভিশনে কয়েক বছর প্রচার করেছিল তাঁর গাওয়া ঐ গানগুলো৷ টিআরটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘এসব গানে মদ্যপান, ধূমপান এবং সন্ত্রাসের পক্ষে প্রচারণা চালানো হয়েছে, যা দেশের শিশু-কিশোরদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে৷'' নিষিদ্ধ গানগুলোর মধ্যে বিখ্যাত বেশ কয়েকটি পপ সংগীতও রয়েছে৷ পপ সংগীত শিল্পীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷
অবশ্য তুরস্কে সংগীতের উপর নিষেধাজ্ঞা নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ানের দল ক্ষমতা নেয়ার আগে থেকে এই ঘটনা চলে আসছে৷ ওরহ্যান গিনসবে'র ‘মে দিস ওয়ার্ল্ড এন্ড' নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আশির দশকে৷
তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়৷ এর্দোয়ানের দল একেপি ফেব্রুয়ারিতে পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, প্রতিটি গান এবং গানের সঙ্গে যেসব দৃশ্য রেকর্ড করা হয়, সেগুলো প্রচারের আগে তুরস্কের সম্প্রচার কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে৷ নতুন এই আইনে অনলাইনেও সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে৷
বুরসু কারাকাস/এপিবি