1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডাভোসে গাজা সঙ্কট নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি

সঞ্জীব বর্মন৩০ জানুয়ারি ২০০৯

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে চলতি বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে এক আলোচনাসভায় ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস ও তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের মধ্যে বাকযুদ্ধের ফলে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/Gjhd
গাজায় ইসরায়েলের সেনা অভিযানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পেরেসছবি: AP

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে চলতি বছরের বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের মূল বিষয় বিশ্বজুড়ে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট৷ রাজনীতি ও অর্থনীতি জগতের প্রায় ২,৫০০ শীর্ষ প্রতিনিধি ঘরোয়া পরিবেশে এছাড়াও নানা বিষয় মত বিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছেন৷ লোকচক্ষুর অন্তরালে এমনই এক নির্বিবাদ পরিবেশে বৃহস্পতিবার একটি ঘটনা সবার নজর কেড়েছে৷ ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন মনে হলেও আগামী দিনে তার কোনো সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখা যাবে কি না তা স্পষ্ট নয়৷

গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সেনা অভিযানকে কেন্দ্র করে গোটা বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ বিশেষ করে গাজার সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশার ফলে ক্ষোভের মাত্রাও কম নয়৷ ডাভোসে এক আলোচনাসভায় এই সঙ্কটের বিষয়ে আলোচনা চলছিল৷ বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেস ও তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান৷ ছিলেন আরব লীগের মহাসচিব আমর্ মুসা ও জাতিসংঘের মহাসচিব মান কি মুন৷ সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ওয়াশিংটন পোস্টের এক সাংবাদিক৷ পেরেস গাজায় ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর অভিযানের পক্ষে একাধিক যুক্তি তুলে ধরেন৷ এর্দোয়ানের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘প্রতি রাতে যদি ইস্তানবুল শহরে কয়েক’শো রকেট হামলা ঘটত, সেক্ষেত্রে আপনি কী করতেন?’’ এর্দোয়ান বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট পেরেস, আপনি আমার চেয়ে বয়সে বড়৷ হয়তো আপনার মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করছে, তাই আপনি এমন কঠিন শব্দ বাছাই করছেন৷ আপনারা মানুষকে হত্যা করেছেন৷ সমুদ্রতটে যেসব শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের কথা আমার মনে আছে৷’’

এমন আবেগভরা আলোচনার নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও এর্দোয়ান তাঁর বক্তব্য বলে যাওয়ার চেষ্টা করলে সঞ্চালক তাঁকে বাধা দেন৷ এরপর এর্দোয়ান ক্ষোভে ফেটে পড়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন এবং তাঁকে কথা বলার সুযোগ না দেওয়ায় ভবিষ্যতে আর কোনোদিন ডাভোসে আসবেন না বলে জানিয়ে দেন৷ এর্দোয়ানের হিসেব অনুযায়ী পেরেস ২৫ মিনিট সময় পেয়েছেন, যার অর্ধেক সময়ও তাঁকে দেয়া হয় নি৷ তড়িঘড়ি করে ডাকা এক সাংবাদিক সম্মেলনে এর্দোয়ান এই অপ্রিয় ঘটনার জন্য সঞ্চালককেই দায়ী করেন৷ তাছাড়া প্রেসিডেন্ট পেরেস তাঁকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যথেষ্ট মর্যাদা দেন নি বলেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ পেরেস অবশ্য পরে টেলিফোনে এর্দোয়ানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গেছে৷

ইসরায়েল ও তুরস্কের সুসম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পেরেস ও এর্দোয়ানের এই বাগ্‌যুদ্ধ বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ শুধু সুসম্পর্ক নয়, ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়া ও একাধিক ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রেও তুরস্ক মধ্যস্থতা চালিয়ে আসছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে পাঠানো এক বার্তায় এর্দোয়ান ঐ অঞ্চলে সক্রিয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর উপর সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগানোর বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখার ডাক দিয়েছেন৷ এক্ষেত্রে নতুন মনোভাবের প্রয়োজন আছে বলে এর্দোয়ান মনে করেন৷ মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ মার্কিন দূত জর্জ মিচেল রবিবার আঙ্কারায় এর্দোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন৷