ডলার বাঁচাতে আমদানি কমছে
৬ জুন ২০২৩তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে আমরা আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ গত দুই মৌসুমে আমন ও বোরো রপ্তানি ভালো হয়েছে৷ তাই আমরা স্থানীয় বাজার থেকে বাড়তি শস্য কিনতে চাই৷ '
খাদ্য অধিদপ্তর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫ লাখ টন চাল ও ৬ লাখ টন গম কিনবে৷ এখান থেকে নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে ভর্তুকিতে বিক্রয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে বিতরণ করা হবে৷
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট নথি অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চেয়ে এবার চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ শতাংশ কম৷
এই হিসাব অনুযায়ী, শস্য ক্রয়ের বরাদ্দ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার ৫৯২ কোটি টাকায় রাখা হয়েছে৷ গমের ক্ষেত্রে সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ টন থেকে ১৪ শতাংশ কম কেনার পরিকল্পনা করেছে৷
২০২৩-২৪ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৩ শতাংশ বেশি ১৯ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের নথি অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ১ লাখ মেট্রিক টন গমও কিনতে চায় সরকার৷
সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চাল কিনতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে৷ যা ২০২২-৩৩ অর্থবছরের ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি৷
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ ক্রয় বৃদ্ধিতে কৃষক আরও ভালো দাম পাবেন৷ একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে৷'
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে বিদেশ থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ৬ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি হয়েছে৷
আগামী ৩১ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া বোরো ক্রয় মৌসুমে গমের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার থেকে সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বা ধান কিনবে খাদ্য অধিদপ্তর৷
স্থানীয় বাজার থেকে ৩ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও সাড়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ধান কেনা হয়েছে৷ যা রোববার পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ১৩ হাজার মেট্রিক টনে৷
অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ক্রয় বৃদ্ধি সত্ত্বেও সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের সামগ্রিক সংগ্রহ ৫ শতাংশ কমিয়ে ৩১.৬১ লাখ টন করার পরিকল্পনা করেছে৷ সেই সাথে বিতরণনের পরিমান কাটছাঁট করার পরিকল্পনা করছে৷ খোলা বাজারে বিক্রি বা (ওএমএস) মতো নগদ বিক্রয় স্কিমের মাধ্যমে আগামী অর্থবছরে চাল বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৪.১৯ লাখ টন যা বিদায়ী অর্থবছরের ১৪.৮৩ লাখ টন থেকে ৪ শতাংশ কম৷
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য গম বিতরণের লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হয়েছে৷
কাজের বিনিময়ে খাদ্য এবং ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের মতো কর্মসূচির ক্ষেত্রে সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ লাখ ৯৮ হাজার টন চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ যা বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় ৯ শতাংশ কম৷ একইভাবে, সরকার এই প্রকল্পের অধীনে গম বিতরণ কমানোর পরিকল্পনা করেছে৷
বিতরণ কমানোর পরিকল্পনার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে ৷'
এনএস/কেএম (দ্য ডেইলি স্টার)