শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
২০ জানুয়ারি ২০১৭সকালে স্ত্রী মেলানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে গির্জায় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিন শুরু করেন ট্রাম্প৷ হোয়াইট হাউসের কাছের গির্জাতেই তাঁরা এই পর্ব সারেন৷ তারপরই ছিল প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন হোয়াইট হাউসে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বিদায়ী ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কফি পানের আনুষ্ঠানিকতা৷ ঐতিহ্য অনুযায়ী ট্রাম্প দম্পতিকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানান ওবামা৷
এক সঙ্গে কফি পানের উত্তরসূরির জন্য বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে একটি ব্যক্তিগত নোট লিখতে হয়৷ সেই প্রথা অনুসরণ করে ওবামা ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেন৷
তারপর বিদায়ী এবং নতুন প্রেসিডেন্ট ও তাঁদের স্ত্রীদের নিয়ে ক্যাপিটলের দিকে শুরু হয় গাড়ি শোভাযাত্রা৷ সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী দুপুরে এবং বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাত এগারোটায় শপথ পাঠ করেন ট্রাম্প৷ তাঁকে শপথ পাঠ করান যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্ট৷ শপথগ্রহণের একটু পরই সমবেত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ট্রাম্প৷ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনও শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন৷
এক টুইট বার্তায় হিলারি জানান, ‘‘আজ আমি এখানে এসেছি আমাদের গণতন্ত্র এবং দীর্ঘকাল ধরে টিকে থাকা মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানাতে৷ আমাদের দেশ ও দেশের ভবিষ্যতের ওপর আমি কখনোই বিশ্বাস হারাবো না৷’’
শপথগ্রহণ শেষে দেয়া ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত জনতার ঐক্য ও শক্তির ওপরই গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ বিশ্বসভায় যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্বও তাঁর কাম্য৷ তাই তিনি বলেছেন, ‘‘আজ থেকে এ দেশ চলবে নতুন দৃষ্টভঙ্গি নিয়ে আর তা হবে ‘অ্যামেরিকা প্রথম’৷’’ পাশাপাশি নির্বাচনি প্রচারাভিযানের সময় থেকে বলে আসা ‘আমরা আবার একসঙ্গে অ্যামেরিকাকে মহান জাতির উচ্চতায় নিয়ে যাবো’ অঙ্গিকারেরও পুনর্ব্যক্ত করেছেন৷ তবে ধনকুবের থেকে রাজনীতির ময়দানে এসেই রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে যাওয়া ট্রাম্প ভাষণ শুরু করেছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ধন্যবাদ জানিয়ে৷ এ সময় ওবামা দম্পতির প্রশংসা করেছেন৷ ওবামা ও মিশেলের প্রশংসা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওবামা পরিবার ছিল চমৎকার৷’’ এ সময় ওবামাকেও মাথা নেড়ে সাড়া দিতে দেখা গেছে৷
তবে ভাষণের বড় একটা অংশ জুড়েই ছিল জনতার প্রশংসা৷ ট্রাম্পের ভাষায়, ‘‘আজ শুধু ঐতিহ্য অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরই হচ্ছে না, আজ ওয়াশিংটন থেকে ক্ষমতা তুলে দেয়া হচ্ছে আপনাদের হাতে৷’’
ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্রে আর অভিবাসন প্রত্যাশীদের আসতে দেবেন না বললেও অভিষেক ভাষণে এ প্রসঙ্গে কিছু বলেননি৷ তবে তাঁর সরকারের অবস্থান যে ‘উগ্র ইসলামপন্থিদের’ বিরুদ্ধে সে ইঙ্গিত দিয়েছেন৷
২০ জানুয়ারি, ২০১৭ – এই তারিখটিকে অ্যামেরিকা চিরকাল স্মরণ করবে বলেও মনে করেন ট্রাম্প৷
দিনটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অভিষেক হিসেবেই হয়ত মনে রাখবে না সারা বিশ্ব৷ ট্রাম্পের অভিষেকের দিনে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভও হয়েছে৷ ওয়াশিংটন ডিসিতে বিক্ষুব্ধদের নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)