ট্রাম্পের সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
২২ ডিসেম্বর ২০২১২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার অনুসারীদের পক্ষ থেকে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়৷ দাবি করা হয়, আটলান্টার স্টেট ফার্ম অ্যারেনায় ভোট গণনার এক ভিডিওতে রুবি ফ্রিম্যান, তার মেয়ে ওয়ান্ড্রিয়া 'শায়ে' মস এবং ফুলটন কাউন্টির আরেক নির্বাচন কর্মীকে ভোট কারচুপিতে অংশ নিতে দেখা গেছে৷ অভিযোগে বলা হয়, ফ্রিম্যান ও তার মেয়ে একটি ব্রিফকেস থেকে কতগুলো নকল ব্যালট পেপার বের করে সেগুলো কয়েক দফা গণনা করেছেন৷ আরো দাবি করা হয়, এভাবে ১৮০০০ জাল ভোট দিয়ে জর্জিয়ায় ট্রাম্পকে হারানো হয়েছে৷ এর ফলে ট্রাম্প সমর্থকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷ ফ্রিম্যান ও তার মেয়েকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়, হত্যার হুমকিও দেয়া হয় তাদের৷
প্রতিবেদনে ট্রাম্পের সহযোগী হিসেবে তুলে ধরা এক ব্যক্তির বক্তব্যে উঠে এসেছে নির্বাচনের এক মাস পর, অর্থাৎ, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতের এক বৈঠকের কথা৷ ‘ব্ল্যাক ভয়েস ফর ট্রাম্প'-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হ্যারিসন ফ্লয়েড সোমবার রয়টার্সকে বলেন, সেদিন শিকাগোর ট্রেভিয়ান কুট্টিকে আটলান্টায় গিয়ে রুবি ফ্রিম্যানের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন তিনি৷ ৬২ বছর বয়সি রুবি ফ্রিম্যান অস্থায়ী নির্বাচন কর্মী৷ হ্যারিসন ফ্লয়েডের দাবি, তারপর জর্জিয়ার কোব কাউন্টির পুলিশ স্টেশনে রুবি ফ্রিম্যানের সঙ্গে ট্রেভান কুট্টির কথা হয়৷ তাদের সেই কথোপকথনে ফ্লয়েডও নাকি টেলিফোনে যুক্ত হয়েছিলেন৷
সেদিন কুট্টির সঙ্গে ট্রাম্পের দলের নেতা গ্যারিসন ডগলাসকেও যেতে বলেছিলেন এবং তার অনুরোধে ডগলাসও সেখানে গিয়েছিলেন বলে ফ্লয়েড জানান৷
তবে সোমবার এক বিবৃতিতে ফ্রিম্যানকে ভোট কারচুপিতে অংশ নেয়ার অভিযোগ স্বীকারের জন্য চাপ দেয়ার বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করে ডগলাস বলেন, ‘‘৪ জানুয়ারি আমি কর্মহীন ছিলাম৷ স্বেচ্ছাসেবক চালক হিসেবে কাজ করার অনুরোধ জানানো একটি ফোন পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম৷ এই কাজ আমি অতীতেও বহুবার করেছি৷ গাড়ি চালানো ছাড়া সেখানে আমার কোনো ভূমিকা ছিল না৷''
রয়টার্সের কাছে ফ্লয়েড আরো দাবি করেন, কেন্দ্রীয় আইন প্রয়োগ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি ফোন করে এমন একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ ওই ব্যক্তি নিজের নাম বলেছিলেন চ্যাপলেইন৷ ফ্লয়েডের দাবি, চ্যাপলেইন নিজে শ্বেতাঙ্গ, তাই কৃষ্ণাঙ্গ রুবি ফ্রিম্যান তাকে বিশ্বাস করবেন না- এমন ধারণা থেকেই তাকে বৈঠকটি আয়োজনের ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন৷ প্রসঙ্গত, ফ্রিম্যানের মতো ফ্লয়েড, ডগলাস এবং কুট্টিও কৃষ্ণা্ঙ্গ৷
তবে ফ্লয়েড আরো দাবি করেন, ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারির আগেই তিনি ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন৷ রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ‘‘ট্রাম্প নিজে কখনো আমাকে জর্জিয়ায় যেতে বলেননি৷ ব্ল্যাক ভয়েসেস ফর ট্রাম্প-এর বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গেও বিষয়টির কোনো সম্পর্ক নেই৷''
‘ব্ল্যাক ভয়েসেস ফর ট্রাম্প'-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরের দাবি, তিনি ট্রাম্পের দলের পক্ষ থেকে যে আইনি ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছিল, রুবি ফ্রিম্যানকে তা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্যই এমন একটি সভার আয়োজন করেছিলেন৷ রুবি ফ্রিম্যানের আইনজীবী ভন ডুবোস এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি৷ তবে এক মুখপাত্রের মাধ্যমে রুবি ফ্রিম্যান জানিয়েছেন, আইনি ব্যবস্থা থেকে রেহাই দেয়ার অনুরোধ কাউকে কখনোই তিনি করেননি৷
এদিকে এক ইন্সটাগ্রাম পোস্টে কুট্টি কারচুপিতে অংশ নেয়ার অভিযোগ স্বীকারের জন্য ফ্রিম্যানকে চাপ দেয়ার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন৷
এখন রিপাব্লিকান ন্যাশনাল কমিটিতে রয়েছেন ডগলাস৷ এ ঘটনা সম্পর্কে রয়টার্সের সঙ্গে তিনি কথা বলেননি৷
এসিবি/ কেএম (রয়টার্স)