ট্রাম্পের নিন্দায় আফ্রিকার দেশগুলি
৮ জানুয়ারি ২০২১ডনাল্ড ট্রাম্পের ভাষাতেই তাঁকে জবাব দিল আফ্রিকা। বুধবার ক্যাপিটল ভবনে তাণ্ডবের পর গোটা বিশ্বের মতো মুখ খুলেছেন আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের বক্তব্য, এ ধরনের ঘটনা আফ্রিকার কোনো দেশে হলে অ্যামেরিকা সবার প্রথম উদ্বেগ প্রকাশ করত। সেই দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করত। এবার কি আফ্রিকার নেতারা সেই একই কাজ করবেন অ্যামেরিকার সঙ্গে? অন্য দিকে, জিম্বাবোয়ের রাষ্ট্রপ্রধান জানিয়েছেন, অ্যামেরিকার ঘটনাবলীর দিকে তিনি নজর রাখছেন। ক্ষমতা হস্তান্তর ঠিকমতো না হলে জিম্বাবোয়ে অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে।
২০১৮ সালে ডনাল্ড ট্রাম্পের একটি বক্তৃতা এখনো ভুলতে পারেনি আফ্রিকা। বস্তুত, চার বছরের প্রেসিডেন্ট টার্মে একটিবারের জন্যেও আফ্রিকার কোনো দেশে যাননি ট্রাম্প। ২০১৮ সালের একটি বক্তৃতায় আফ্রিকার দেশগুলিকে 'শিটহোল কান্ট্রি' বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, নাইজেরিয়া থাকা আফ্রিকার শরণার্থীদের অত্যন্ত খারাপ ভাষায় অভিহিত করেছিলেন তিনি। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে সেই কথাই এখন শেয়ার করছেন আফ্রিকার সাধারণ মানুষ। ট্রাম্পের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলেও আফ্রিকা জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হ্যাশট্যাগ ট্রাম্প। সেখানে বলা হচ্ছে, এবার ট্রাম্প বলুন, শিটহোলের অর্থ কী?
বহু মানুষ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে লিখছেন, সাধারণত, হেরে গিয়েও ক্ষমতা ছাড়তে চান না আফ্রিকার নেতারা। ট্রাম্পও তাঁদের মতো আচরণ করছেন। তাহলে ট্রাম্প নিশ্চয় আফ্রিকার কোনো দেশের বাসিন্দা। বস্তুত, নির্বাচনে হারার পর থেকে ট্রাম্প যা যা ঘটনা ঘটিয়েছেন, এবং শেষপর্যন্ত ট্রাম্পের সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে যে তাণ্ডব চালিয়েছেন, তা দেখে খানিকটা মজা করেই নিন্দা জানাচ্ছেন আফ্রিকার মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, এ ধরনের ঘটনা আফ্রিকাতে দেখতেই তাঁরা অভ্যস্ত। অ্যামেরিকাতেও যে এমন হতে পারে, তা তাঁরা কখনোই ভাবেননি। যে অ্যামেরিকা আফ্রিকার দেশগুলির গণতন্ত্র নিয়ে এত চিন্তিত, তাদের গণতন্ত্র আজ কোথায়?
নাইজেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন বৃহস্পতিবার টুইট করে গণতন্ত্রের প্রশ্নই তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, শান্তির জন্য হেরে যাওয়াও ভালো। এ কথা গোটা বিশ্বের মনে রাখা উচিত। নাইজেরিয়ায় নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে ক্ষমতা ধরে রাখার কোনো চেষ্টাই করেননি গুডলাক। পরবর্তী প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন। আফ্রিকার দেশগুলিতে যা সব সময় দেখা যায় না।
তবে ট্রাম্প এবং তাঁর অনুগামীদের আচরণে কোনো কোনো আফ্রিকার দেশ বেশ ক্ষুব্ধ। জিম্বাবোয়ের মতো অনেক দেশই জানিয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে তারা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। যদিও পরিস্থিতি যা, তাতে ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন শপথ নেবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাইডেন প্রেসিডেন্টের অফিসে বসে পড়লে পরিস্থিতি বদলাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)