টু-জি কাণ্ডের জেরে মন্ত্রিত্ব হারালেন দয়ানিধি মারান
৭ জুলাই ২০১১টু-জি স্পেকট্রাম কাণ্ডের ভূত মনমোহন সিং সরকারের পিছু ছাড়ছেনা৷ এরই জেরে আজ বস্ত্রমন্ত্রী দয়ানিধি মারানকে ইস্তফা দিতে হয়৷ কয়েকদিন ধরে মারানের ইস্তফা নিয়ে চলছিল জোর জল্পনা, সরকার ও দলের শীর্ষস্তরে বসে ঘন ঘন বৈঠক৷ মারানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ গতকাল সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা সিবিআই-এর প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়, প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত টেলিকম মন্ত্রী থাকাকালীন দয়ানিধি মারান তাঁর ঘনিষ্ঠ এক বিদেশি কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন৷
কী এই সুবিধা? টেলিকম সংস্থা এয়ারসেলের কর্তাব্যক্তি শিবশঙ্করনকে চাপ দিয়ে ভয় দেখিয়ে এয়ারসেলে তাঁর ৭৪% শেয়ার ম্যাক্সিম নামে এক মালয়েশিয়ান কোম্পানিকে বেচতে বাধ্য করেছিলেন মারান৷ গোড়ায় শিবশঙ্করন শেয়ার বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় এয়ারসেলের ব্যবসা বাড়ানোর লাইসেন্স আটকে দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু বিক্রি করার পরই তিনি লাইসেন্স পেয়ে যান৷ আর তারপরই ম্যাক্সিম মারানের পারিবারিক সংস্থা সান টিভিতে লগ্নি করে ৬০০ কোটি টাকা৷ এই মর্মে শিবশঙ্করন নিজেই অভিযোগ করেছিলেন৷ কার্যত তা সমর্থন করা হয় সিবিআই-এর রিপোর্টে৷
দয়ানিধি মারানের ইস্তাফার দাবি জানিয়ে আসছিল জয়ললিতার এআইএডিএমকে, বিজেপি ও বামদলগুলি৷ তাদের মন্তব্য, অনেক আগেই মারানকে সরানো উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর৷ জয়ললিতার মন্তব্য, মারানের আগেই ইস্তফা দেয়া উচিত ছিল৷ নাহলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল তাকে বরখাস্ত করা৷ বিজেপির প্রতিক্রিয়া, পুরো দুর্নীতির চেহারাটা যখন স্পষ্ট, তখন প্রধানমন্ত্রী এতো দেরি করলেন কেন? বিশ্লেষকদের মতে, মারান সরকারের বড় শরিক ডিএমকে দলের বলে করুণানিধির সঙ্গে আলোচনা করতে হয়৷ এর প্রেক্ষিতে সিপিএমের বৃন্দা কারাত বলেন, জোটধর্মের দোহাই দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এত বড় দুর্নীতির সঙ্গে কীভাবে আপোশ করতে পারেন? উপায়ান্তর না দেখে করুণানিধি মারানের ইস্তফায় রাজি হন৷ মারান হলেন ডিএমকে দলের দ্বিতীয় মন্ত্রী, যাকে পদত্যাগ করতে হলো৷ প্রথম জন জেলবন্দি এ রাজা৷ এবার রাজার মত একইভাবে জেরা করতে পারে সিবিআই৷ প্রমাণসাপেক্ষে প্রয়োজন হলে গ্রেপ্তারও করতে পারে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন