টাকা আয় করতে চান? আউটসোর্সিং করুন
১ আগস্ট ২০১১আউটসোর্সিং কী
অ্যামেরিকা, ইউরোপে যেসব কোম্পানি তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করে তারা তাদের কাজের বড় একটা অংশ অন্য দেশের কর্মীদের দিয়ে করিয়ে থাকে৷ অর্থ বাঁচানোই এর প্রধান উদ্দেশ্য৷ কারণ অন্য দেশের কর্মীদের কম টাকা দিয়েই কাজ করানো যায়৷ এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন, ফিলিপাইন, ভিয়েতনামের জনশক্তি৷ এখন অবশ্য এসব নামের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও ঢুকে গেছে৷
বিশ্ব তালিকায় বাংলাদেশ
গত বছরের ডিসেম্বরে বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘গার্টনার' একটি তালিকা তৈরি করেছে৷ সেখানে আউটসোর্সিং এর জন্য ভাল এমন ৩০টি দেশের নাম আছে৷ বাংলাদেশ তাদের মধ্যে একটি৷ ফলে যেসব কোম্পানি আউটসোর্সিং এর জন্য লোক খুঁজে তারা বাংলাদেশকেও তাদের অন্যতম পছন্দের তালিকায় রাখছে৷ এমন তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সংগঠন ‘বেসিস'এর প্রধান মাহবুব জামান৷ তিনি বলছেন, গার্টনারের প্রতিবেদনের কারণে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটা ভাল ইমেজ তৈরি হয়েছে৷
গার্টনার বলছে, সস্তা শ্রম আর পর্যাপ্ত জনশক্তি, এই দুটি কারণে বাংলাদেশ আউটসোর্সিং এর জন্য সম্ভাবনাময় একটি দেশ৷ বেসিস প্রধান মাহবুব জামানও এর সঙ্গে একমত৷ তবে তিনি বলছেন সস্তা শ্রমের পাশাপাশি পণ্যের গুনগত মানও একটা কারণ৷ তাঁর মতে, এখন পর্যন্ত যেসব কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে আউটসোর্সিং করিয়ে নিয়েছে তারা বাঙালি তরুণদের কাজে সন্তুষ্ট৷ তাই তারা বারবার বাংলাদেশেই ফিরে আসছে৷ যেমন ডেনমার্কের একটা বড় কোম্পানি গত পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশকেই কাজ দিচ্ছে বলে জানালেন জামান৷
আর পর্যাপ্ত জনশক্তির যে বিষয়টা গার্টনার বলছে সে ব্যাপারে বেসিস প্রধান জানালেন, ‘‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৫ ভাগের বয়স ২৫ এর নীচে৷ অর্থাৎ তারা তরুণ৷ এরাই তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল করে৷ সুতরাং এসব তরুণদের যদি ভালভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যায় তাহলে আউটসোর্সিং থেকে বাংলাদেশ অনেক অর্থ আয় করতে পারবে৷''
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০০ নিবন্ধিত আউটসোর্সিং কোম্পানি রয়েছে৷ যেখানে কাজ করেন প্রায় বিশ হাজার জন৷
কীভাবে তথ্য পাবেন
তবে শুধু কোম্পানিই নয়, ব্যক্তিগতভাবেও ইচ্ছে করলে যে কেউ আউটসোর্সিং এর কাজ করতে পারে৷ ইতিমধ্যে এ ধরণের একটা জনশক্তি দাঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশে৷ যারা এভাবে কাজ করেন তাদের বলা হয় ‘ফ্রিল্যান্সার'৷ জামানের হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার৷ এদের অর্ধেকই নিয়মিত আউটসোর্সিং এর কাজ করে থাকে বলে জানান তিনি৷ একেকজন ফ্রিল্যান্সার এ থেকে প্রতি মাসে বেশ ভাল একটা অর্থ আয় করতে পারে, যেটা দিয়ে পরিবারের খরচ চালিয়েও ভাল একটা অঙ্ক জমা করা যেতে পারে৷
এমনই একজন হলেন আব্দুল্লাহ আল জাহিদ - যাকে এবছরের সেরা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পুরস্কার দিয়েছে বেসিস৷ মাত্র ১৬ বছর বয়সি জাহিদ আউটসোর্সিং থেকে মাসে গড়ে আয় করছেন প্রায় ৭০ হাজার টাকা৷ ফলে এই বয়সেই তিনি তার পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস হয়ে গেছেন৷
ফলে এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কীভাবে আপনিও আউটসোর্সিং করতে পারেন৷ আর এর জন্য কী যোগ্যতাই বা থাকা দরকার৷ এ ব্যাপারে বেসিস প্রধান জামান জানালেন, ফ্রিল্যান্সারদের প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে তাদের ওয়েবসাইটে একটি ফোরাম খোলা হয়েছে৷ যেখান থেকে আগ্রহী যে কেউ তথ্য পেতে পারে৷ তিনি বলছেন, ‘‘ফ্রিল্যান্সারদের যত প্রশ্ন আছে সেগুলোর উত্তর ফোরাম থেকে দেয়া শুরু হয়েছে৷''
সুতরাং বিস্তারিত তথ্য চাইলে চলে যান বেসিসের ওয়েবসাইটে৷ ঠিকানা www.basis.org.bd
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই