সৌরবাতি
২৪ মে ২০১২জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উপর এর প্রভাব এবং জ্বালানি সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো জার্মানির বন শহরে৷ সেখানে বাংলাদেশের জন্য পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি হিসেবে সৌর বিদ্যুতের নানা দিক তুলে ধরেন জার্মানির ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিভূতি রায়৷
ডিডাব্লিউ এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর সাম্প্রতিক সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ‘‘২০০৮ সালে আমি খুব সৌভাগ্যবশত ইউরোপীয় কমিশন থেকে পাঁচ লাখ ইউরো পাই, যা দিয়ে প্রথমে বাংলাদেশের খুলনায় ছাদের উপরে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদ্ধতি শুরু করি৷ এটা দেখার পরপরই ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে বাড়ির ছাদে সৌর শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলা শুরু হয়৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য যে পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করি, তা ঠিক সবার কাছে পৌঁছেনি৷ ফলে আমাদেরকে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হয়৷ আমরা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর চাহিদার উপর ভিত্তি করে মাত্র দু'টি সৌরবাতি এবং একটি প্লেট উৎপাদন করি৷ এছাড়া বেশি ওয়াটের বাতির বদলে মাত্র এক ওয়াটের বাতি সরবরাহ করি৷ কিন্তু তারপরও বিপত্তি থেকে যায়৷ এরপর আমরা আরো এক ধাপ এগিয়ে নিজেরা একটি বিদ্যুৎ কারখানার মতো একটি বাড়িতে বিপুল সংখ্যক সৌর প্যানেল লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করি এবং দিনের শেষে গ্রাহকদের শুধুমাত্র চার্জিত দু'টি বাতি ধার দিই৷ বিনিময়ে চার ঘণ্টার জন্য আট টাকা করে নিয়ে থাকি৷ এ পদ্ধতি শুরুর পর থেকে এখন ঐ অঞ্চলে আমাদের এই বাতির চাহিদা প্রচুর এবং এতে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ বেশ লাভবান হয়েছে বলে আমাদের কাছে তারা জানিয়েছে৷''
গত প্রায় দেড় বছর ধরে সানেক লিমিটেড কোম্পানির নামে তাঁর উদ্ভাবিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই প্রবাসী বিজ্ঞানী৷ এই প্রকল্পের চাহিদা ও সাফল্য ব্যাপক হওয়ায় তা বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানান ড. রায়৷
এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কেন্দ্রীয়ভাবে চিন্তা করা, স্থানীয়ভাবে পরিকল্পনা করা এবং একক পরিবার ও ব্যক্তিপর্যায়ের চাহিদা মোতাবেক বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন৷ তিনি বিশেষভাবে মাইক্রো-ডিসেন্ট্রালাইজেশন বা ক্ষুদ্র-বিকেন্দ্রীকরণের সূত্র ধরে জ্বালানি সমস্যার সমাধানের কথা বলেন৷
সাক্ষাৎকার: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন