জার্মানিতে জোট গঠনে সমস্যা
১৭ নভেম্বর ২০১৭গত ২৪শে সেপ্টেম্বর জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সম্ভাব্য জোট সরকার গঠনের জন্য অনুকূল হয়নি৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির পছন্দের উদারপন্থি এফডিপি দলের সঙ্গে জোট গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পায়নি৷ সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও সবুজ দলের সম্মিলিত আসনসংখ্যাও যথেষ্ট নয়৷ আগের মতো ইউনিয়ন ও এসপিডি দলের মহাজোট সরকার চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও শুরুতেই বাতিল করে দিয়েছেন এসপিডি দলের শীর্ষ নেতা৷
ফলে অবশিষ্ট রয়েছে একটি মাত্র সম্ভাব্য জোট৷ দলের রংগুলির কারণে এই জোটের পোশাকি নাম জামাইকা কোয়ালিশন৷ এফডিপি দলের সঙ্গে সবুজ দলকেও সঙ্গে নিয়ে জোট গঠন করতে চায় ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির৷ ভোটারদের রায় মেনে পরস্পরের মধ্যে আপোশ মীমাংসা করে এই জোট গঠন করার জন্য চাপ দিচ্ছেন ম্যার্কেল৷
এই প্রচেষ্টা বিফল হলে সম্ভবত নতুন করে আবার নির্বাচন ডাকতে হবে৷ সে ক্ষেত্রে জার্মানির মানুষ বিষয়টি মোটেই ভালোভাবে নেবেন না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ম্যার্কেল৷ উল্লেখ্য, সংখ্যালঘু সরকার গঠনও আরেকটি বিকল্প হতে পারে, যদিও তার স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ থেকে যাবে৷
তিনটি রাজনৈতিক শিবিরের চারটি দলের মধ্যে আদৌ জোট গঠন করা সম্ভব কিনা, সেই নিয়ে প্রায় চার সপ্তাহ ধরে আলোচনা করেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে৷ প্রথা অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে ঐকমত্য ছাড়া জোট সরকার গঠনের মূল আলোচনা শুরু করাই সম্ভব নয়৷ শুক্রবার সকালের মধ্যেই প্রাথমিক আলোচনা শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল৷ কিন্তু ইতিবাচক ফলাফল না পাওয়ায় আলোচনা সপ্তাহান্ত পর্যন্ত চলবে৷
সম্ভাব্য জোটসঙ্গীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিরোধ দেখা যাচ্ছে কয়েকটি বিষয় নিয়ে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার প্রশ্নে পরিবেশবাদী সবুজ দলের কঠোর অবস্থান বাকিরা সবাই মানতে পারছে না৷ সবুজ দল চায়, শরণার্থীরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জার্মানিতে নিয়ে আসার অধিকার পাক৷ এই প্রশ্নেও রুখে দাঁড়িয়েছে বাভেরিয়ার সিএসইউ দল৷ সরকারি অর্থ ব্যয় নিয়েও বিরোধ মিটছে না৷
বহুকাল পর সরকারে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েও বিশেষ করে ছোট দলগুলি যে যার নিজস্ব আদর্শ বর্জন করতে প্রস্তুত নয়৷ বরং নিজেদের অবস্থানে অটল থেকে সমর্থকদের আস্থা ধরে রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য৷ তার উপর উগ্র দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের উত্থানের কারণে বাভেরিয়ার সিএসইউ দলও শরণার্থী ও অভিবাসনের বিষয়ে কড়া অবস্থান ছাড়তে চাইছে না৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলও নিজের সিডিইউ দলের মধ্যে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ ফলে সবার মুখরক্ষা করে জোট গঠনের আলোচনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা মোটেই সহজ কাজ নয়৷
এসবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)