‘জীবন্ত' পুতুলের গা ছমছম করা ছবি
৭ মে ২০২১এই পুতুলগুলি খেলার জন্য তৈরি হয় নি৷ পোলিশ শিল্পী মোনিকা মস্টোভিক প্রায় জীবন্ত দেখতে এই পুতুলগুলিকে এমন প্রেক্ষাপটে সাজিয়ে রাখেন, যে দেখলেই গা ছমছম করে৷ মনে হয়, হঠাৎ যেন নড়ে না ওঠে৷ মোনিকা বলেন, ‘‘আমি বিজেডি পতুল সংগ্রহ করি এবং পুতুলের ছবি তুলি৷ এই পুতুলই আমার প্যাশন বা নেশা৷ দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি সেগুলির ছবি তুলে আসছি৷''
এশিয়া মহাদেশেই তথাকথিত ‘বল জয়েন্টেড ডল্স'-এর চল শুরু হয়৷ জয়েন্ট বা শরীরের বিভিন্ন ভাঁজের জায়গায় বল ঢুকিয়ে পুতুলের অঙ্গভঙ্গি পছন্দমতো বদলানো যায়৷ পোলিশ এই শিল্পীর বাসায় ২৫টিরও বেশি এমন পুতুল রয়েছে৷ এক রুশ শিল্পী মোনিকার ইচ্ছা অনুযায়ী পুতুলের মুখচ্ছবি ও শরীরের ত্বক রং করেন৷ প্রত্যেক ছবির জন্য মোনিকা এক নতুন চরিত্র সৃষ্টি করেন৷ মোনিকা বলেন, ‘‘পুতুলের চোখ এবং চোখের মণির রং বদলে ফেলা যায়, সোজা অথবা বাঁকা দৃষ্টি সাজানো যায়৷ পরের বার পুতুল অন্য মুখচ্ছবি ও চরিত্র পাবে৷''
পুতুলের জন্য আলাদা করে জামাকাপড়ও সেলাই করা হয়৷ এক শিল্পী বন্ধু সেগুলি তৈরি করেন৷ মোনিকা বলেন, ‘‘নানা মাপের পুতুল রয়েছে, তাই কখনো সঠিক জামাকাপড় খোঁজা কঠিন হয়ে পড়ে৷ হয় বেশি বড়, কখনো খুব ছোট হয়ে যায়৷’’
চামড়ার বুট জুতোও জামাকাপড়ের সঙ্গে মানিয়ে যায়৷ মোনিকা হাতে গ্লাভস পরে পুতুলের মেকআপ অক্ষত রাখার চেষ্টা করেন৷
তার তোলা ছবিগুলি কিন্তু মোটেই পোর্ট্রেট নয়৷ তিনি বরং দর্শকের কল্পনাশক্তি উসকে দিতে চান৷ মোনিকা মস্টোভিক মনে করেন, ‘‘এই পুতুলগুলি আমাকে এত প্রেরণা দেয়, কারণ সেগুলির মুখে হাসির বদলে কখনো সিরিয়াস ভাব, কখনো দুঃখ, কখনো কান্না দেখা যায়৷ পুতুল নয়, এভাবে মানুষ এবং মানুষের আবেগের কাহিনি তুলে ধরা সম্ভব৷''
মোনিকা তার ছবিগুলি ইনস্টাগ্রাম অথবা বিভিন্ন প্রদর্শনীতে দেখান৷ পোল্যান্ডের ক্রাকাউ শহরে নিজের পরিচিত পরিবেশেও এমন প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে৷ বিভিন্ন অবহেলিত জায়গায় পুতুলগুলি বসিয়ে ছবি তুলেছেন শিল্পী৷ অনেক সময় একাধিক পুতুলকে পরিবার অথবা বোনেদের গ্রুপ ফটো হিসেবে দেখা যায়৷
কিছুটা রূপকথা, সামান্য ছমছমে ভাব এবং উপযুক্ত পরিবেশের প্রতি নিষ্ঠার কারণে মোনিকার ছবি দেখে নির্লিপ্ত থাকার উপায় নেই৷
ইয়ানা ওরটেল/এসবি