জি-এইট
১৯ মে ২০১২প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা'র চিন্তাধারাটা সহজেই অনুমেয়৷ নির্বাচনের বছর ইউরোপের মন্দার ছোঁয়াচ যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সংক্রমিত হয়, তা'হলে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনি'র হাতে সেটা তুরুপের তাস হয়ে দাঁড়াবে৷ ফ্রান্সের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ তো বার্লিনেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, শুধু ব্যয়সংকোচের পরিকল্পনায় তিনি সন্তুষ্ট নন৷ ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও মন্টি'ও দেখছেন, গ্রিসের জনতা কিভাবে ব্যালট বক্সে গিয়ে বিদ্রোহ করছে৷
ওলঁদ এবং মন্টি ছাড়াও এবার জি-এইটে তৃতীয় নতুন মুখ হলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদা৷ ওদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবার গোঁসা করে নিজে না এসে, তার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ'কে পাঠিয়েছেন৷ কিন্তু সব মিলিয়ে প্রশ্নটা একই থেকে যাচ্ছে: ইউরোপের ঋণ সংকট ও তার সমাধানের জন্য বাজেট সংস্কার৷ কিন্তু সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করতে শুরু করেছেন অনেকে৷ ক্যাম্প ডেভিডে এই নিয়ে চিন্তা-ভাবনা, সম্ভব হলে ঐকমত্য, এর বেশি উচ্চাশা নেই কারো৷
ওবামা তো শুক্রবারেই ওলঁদ'এর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ঘোষণা করে দিয়েছেন, এই শীর্ষ বৈঠকের লক্ষ্য হবে আর্থিক স্থিতির সঙ্গে প্রবৃদ্ধির জোরদার কর্মসূচি৷ ভালো কথা, কিন্তু ইইউ-র একাধিক সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলাবোধের অভাবই যে ইউরোপকে আজ এই সংকটের মুখে ফেলেছে, চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সেটা ভালো করেই জানেন৷ কাজেই তিনি এতো সহজে আবার সরকারি বদান্যতার রুদ্ধ দুয়ারটি উন্মুক্ত করতে রাজি হবেন কি?
ম্যার্কেল যখন শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্যাম্প ডেভিডে গিয়ে পৌঁছন, তখন ওবামা তাঁকে স্বাগত জানানোর সময় জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কেমন আছেন?'' ম্যার্কেল সে কথার জবাব না দিয়ে, শুধু কাঁধ নাড়েন, যেন বলছেন, ‘‘এই তো, ভালোই৷'' উত্তরে ওবামা সহানুভূতির সঙ্গে বলেন: ‘‘আপনার মাথায় তো এখন অনেক চিন্তা৷''
চিন্তা তো বটেই৷ জি-এইটের অনুচ্চারিত মুখ্য প্রশ্নটি, অন্তত ইউরোপীয়দের কাছে, হল: গ্রিস ইউরো এলাকায় থাকবে কিনা৷ ব্যয়সংকোচের হাত থেকে বাঁচার জন্য গ্রিস যদি ইউরোর হাত থেকেই পলায়ন করে? ওলঁদ শুক্রবার ওবামার পাশে দাঁড়িয়েই বলেছেন: ‘‘আমরা এ'বিষয়ে একমত যে গ্রিসকে ইউরো এলাকায় রাখতে হবে এবং সে'জন্য আমাদের সব কিছু করতে হবে৷''
সেই ‘সব কিছুটা' নিয়েই এখন আলোচনা৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (এপি, রয়টার্স, এএফপি)
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম