1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জিপসি জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন শিক্ষা

ব্লাগোরোদনা গ্রিগরোভা /আরবি২৫ মার্চ ২০১৩

জিপসিরা এক যাযাবর জনগোষ্ঠী৷ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন তারা৷ কিন্তু কোথাও তারা সমাদৃত নয়৷ সবখানেই বৈষম্য বিদ্বেষের শিকার হতে হচ্ছে তাদের৷

https://p.dw.com/p/1834o
Die neue Regierung in Bratislava ist mit Hilfe der EU um die bessere Integration der Roma bemüht. Hier Kinder einer Grundschulklasse für Roma-Kinder. Das problem: Die Eltern schicken die Kleinen nicht regelmäßig zum Unterricht. Sie fehlen oft tagelang unentschuldet the new socialdemocratic government in Bratislava is trying to speed-up integration of young Roma with special schooling and Roma-teachers. unfortunately many Roma-parents are keepiung their kids away from school far to often
ছবি: picture-alliance/Christian Für

ধারণা করা হয়, আজ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে সব জিপসিকে দেখা যায়, তাদের পূর্বপুরুষরা ভারতবর্ষ থেকে এসেছিল৷ দশম শতাব্দীর অনেক আগেই ছোট ছোট দলে দেশ ছাড়ে তারা৷ ছড়িয়ে পড়ে পারস্য, মধ্য এশিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া ইত্যাদি দেশে৷ পরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও যেতে শুরু করে তারা৷

ম্যাসিডোনিয়া রাজধানী স্কোপিয়ে থেকে জার্মানিতে এসেছেন জিপসি সম্প্রদায়ের নেদজো ওসমান৷ সাবেক ইয়ুগোস্লাভিয়ার অন্তর্গত এই দেশটিতে ৫০ হাজারেরও বেশি জিপসি বাস করেন৷ মোট জনসংখ্যার দুই শতাংশের বেশি হলেও নানা রকম বৈষম্যের কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের৷ ছেলেবেলায় স্কুলের কোনো কোনো স্মৃতি এখনও কষ্ট দেয় ওসমানকে৷ স্কুলে গেলেই সহপাঠীদের ঠাট্টা-বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হতো তাকে৷ বলা হতো ‘নোংরা ও উকুনভরা জিপসি'৷ ছোট্ট ওসমান সেই প্রথম বুঝতে পারে যে, সে অন্যদের থেকে আলাদা৷

Nedjo Osman, DW (Romanes) FLASH Format
নেদজো ওসমানছবি: DW

বৈষম্য থেকে মুক্তি পায়নি আজও

৬০-এর দশকের সেই দুরবস্থা থেকে আজও মুক্তি পায়নি জিপসিরা৷ রুমেনিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরিসহ পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আজও তারা এক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নানা বঞ্চনার শিকার৷ জনসাধারণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ তাদের এড়িয়ে চলে৷ তাই তাদের বসবাস করতে হয় আলাদা বসতিতে, প্রত্যন্ত কোনো অঞ্চলে৷ শিক্ষার আলো থেকেও অনেকটা বঞ্চিত তারা৷

কমিউনিজমের সময় পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলিতে জিপসি ছেলেমেয়ের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হতো৷ যেগুলি অবশ্য তেমন মান সম্মত ছিল না৷ সমাজতান্ত্রিক বুলগেরিয়ায় জিপসি বাচ্চাদের অর্ধেকের জন্যই ভিন্ন ক্লাসের ব্যবস্থা ছিল, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠরা তাদের সন্তানদের পাঠাতো না৷ আজ এই সংখ্যাটা ৭৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷

জিপসিদের জন্য আলাদা স্কুল

চেক প্রজাতন্ত্রে জিপসি বাচ্চাদের জন্য এমন সব স্কুলের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা মানসিক প্রতিবন্ধীদের উপযোগী৷ মানবাধিকার সংস্থাগুলির সমালোচনা সত্ত্বেও এই অবস্থার পরিবর্তন হয়নি৷

বুলগেরিয়ার সমাজবিজ্ঞানী ইলোনা তোমোভা তাঁর এক সমীক্ষায় দেখিয়েছেন, কমিউনিস্ট সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর আজ দেশটির শিক্ষা ব্যবস্থায় আরো অবনতি হয়েছে৷ বিকালে বিশেষ ক্লাস নেওয়া বা বিনামূল্যে বই বিতরণ – এসব থেকে হাত গুটিয়ে নেয়া হচ্ছে৷ সামাজিক খাতে অর্থের পরিমাণ কমে যাওয়ায় দরিদ্র জনসাধারণ পিছিয়ে পড়ছে৷ আর দরিদ্র জনসাধারণের এক সিংহ ভাগই জিপসি জনগোষ্ঠী৷ ১৯৯৭ সালে বিশ্বব্যাংকের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুলগেরিয়ায় পাঁচ ভাগের চার ভাগ জিপসিই ছিল দারিদ্র্য পীড়িত৷ আজও এর অন্যথা হয়নি৷

A Roma family enjoy their time in the center of Macedonian capitol Skopje on Tuesday 27 March,2007. The Roma population from the Western Balkans are calling upon the governments of their countries to put greater efforts into improvement of their living conditions, EPA/GEORGI LICOVSKI +++(c) dpa - Report+++
ম্যাসিডোনিয়া রাজধানী স্কোপিয়েতে অবস্থানরত একটি জিপসি পরিবারছবি: picture-alliance/dpa

দারিদ্র্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভাষাসমস্যা

তোমোভা জানান, দারিদ্র্যের সঙ্গে ভাষা সমস্যাটাও জিপসিদের দুর্গতি বাড়াচ্ছে৷ জিপসি বাচ্চারা বাড়িতে নিজেদের ভাষায় কথা বলে৷ শুধুমাত্র স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরই তারা জাতীয় ভাষা যেমন বুলগেরিয়ান বা চেক ভাষার সঙ্গে পরিচিত হয়৷ কিন্তু ক্লাস শেষের পর আবার বাড়িতে এসে যে কে সেই৷ মা-বাবাও তেমন শিক্ষিত নন, অন্য কোনো ভাষায় দখল নেই তাদের৷ সন্তানদের পড়াশোনায় সাহায্য করতে পারেন না তারা৷

জিপসি বাচ্চা ও তরুণদের সংখ্যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে কিন্তু কম নয়৷ তারাই হবে ভবিষ্যতের শ্রমিক বা কর্মী৷ তাই তাদের শিক্ষার বিষয়টি অবহেলা করা যায় না৷ সাথে সাথে সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে এই সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থাও করতে হবে৷ মনে করেন সমাজবিজ্ঞানীরা৷

অন্যদিকে সস্তা জনপ্রিয়তার লোভে কট্টর দক্ষিণপন্থি কিছু দল জিপসিদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে৷ যাতে ভীত হচ্ছে জনসাধারণ৷

এদিকে বিভিন্ন দেশে জিপসিদের সমাজে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে কিছু বেসরকারি সংস্থা৷ গড়ে তুলছে প্রকল্প৷ জিপসি বাচ্চাদের যাতে দূরে ঠেলে না রাখা হয়, সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছে তারা৷ বুলগেরিয়ার ভিডিন শহরে বেশ কয়েকশ বাচ্চা ‘গেটো'র বাইরে সাধারণ স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে৷

TO GO WITH AFP STORY BY ISABELLE WESSELINGH A teacher shows a programm to a boy on a computer during the NGO afterschool program of 'Dincolo of tacere' (Beyond silence) at the NGO's headquarters in Galati city , Romania on February 7, 2013. In Romania, one of the EU's poorest countries, hope to many has come in the form of a computer recycling program that is helping jobless adults and disadvantaged Roma youth beat the odds. AFP PHOTO DANIEL MIHAILESCU (Photo credit should read DANIEL MIHAILESCU/AFP/Getty Images)
জিপসিদের সমাজে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে কিছু বেসরকারি সংস্থাছবি: Daniel Mihailescu/AFP/Getty Images

নেদজো ওসমান ১৯৯০ সালের গোড়া থেকে জার্মানিতে বসবাস করছেন৷ সেই সময় ইয়ুগোস্লাভিয়ায় সংকট দেখা দেয়ায় জিপসি জনগোষ্ঠীর অনেকে জার্মানিতে পালিয়ে আসেন৷ সমাজের একজন হয়েই বেঁচে থাকতে চান তারা৷ ওসমান অভিনয় ও সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প গড়ে তুলেছেন৷ বিশেষ করে জিপসিদের জন্য শিক্ষা প্রকল্পে মনোনিবেশ করেছেন তিনি৷ বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে দিয়েছেন তার চিন্তাধারা৷ জোর দিয়ে বলছেন, সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে জিপসিদেরও চলতে দিতে হবে৷ অন্য দশটা বাচ্চার সঙ্গে একই স্কুলে পড়ার সুযোগ করে দিতে হবে জিপসি বাচ্চাদের৷ ‘‘কেবল তা হলেই সমাজের এক অংশ বলে মনে করতে পারবে তারা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য