জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে অর্ধশত মানুষ
২০ জুন ২০১১বিগত ১৯৮৩ সাল থেকে আলাং বন্দরে জাহাজ ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়৷ এখানে কাজ করছে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক৷ বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ জাহাজ, উড়োজাহাজ এবং কন্টেইনার বর্জ্য এখানে এনে ফেলা হয়৷ তারপর সেগুলোকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করা হয়৷ প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয় এসব শ্রমিকদের হাড়ভাঙ্গা খাটুনি৷ বিষাক্ত গ্যাস আর চিটচিটে তেলের মধ্যেই দিনের পর দিন কাজ করে চলেছে তারা৷ অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে বার্ধক্য যেন অনেক আগেই এসে ভর করেছে তাদের শরীরে৷ তাদেরই একজন কৈলাশ৷
গত ১৫ বছর ধরে এই জাহাজ ভাঙ্গার কাজ করে চলেছেন ২৮ বছরের এই যুবক৷ তার কথায়,‘‘আমি স্টিলের প্লেটগুলোকে জাহাজ থেকে ট্রাকে তুলি৷ প্লেটগুলো খুবই ভারি, কখনো কখনো একেকটার ওজন ৫০ থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত৷ প্লেটগুলোর কোণাগুলোও বেশ ধারালো৷ কিন্তু কপাল ভালো যে এখনও কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি৷''
এসব শ্রমিকদের অনেকেই ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত৷ কোন ধরণের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই এরা জাহাজ ভাঙ্গার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ তাদের নিয়ে কাজ করছেন আইনজীবী বিপুল সংভি৷ তিনি বলেন, ‘‘কাজ চলাকালে অনেক সময় দুর্ঘটনা কিংবা বিস্ফোরণ ঘটে৷ কারণ জাহাজ থেকে তেল বের না করেই এটি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়৷ এটা অবৈধ৷ কিন্তু তারপরও মালিকরা এমনটি করে, কারণ তারা সপ্তাহের পর সপ্তাহ জাহাজ থেকে তেল চুইয়ে বের হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় না৷''
এই আইনজীবী জানান, প্রতি বছর এই আলাং জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় কমপক্ষে অর্ধশত মানুষ৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেবল পাঁচ ছয়টি ঘটনার কথা স্বীকার করে, আর বাকিগুলো অজানাই থেকে যায়৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ