1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান ট্যাংক সরবরাহের জন্য চাপ বাড়ছে

২৪ জানুয়ারি ২০২৩

ইউক্রেনের হাতে আধুনিক ব্যাটেল ট্যাংক তুলে দেবার জন্য জার্মানির উপর চাপ আরো বাড়ছে৷ ছাড়পত্র না পেলেও পোল্যান্ড সেই পদক্ষেপ নেবে৷ রাইনমেটাল কোম্পানিও লেওপার্ড ট্যাংক দিতে প্রস্তুত৷

https://p.dw.com/p/4Mc9t
জার্মানি অনুমতি না দিলেও কয়েকটি দেশের সঙ্গে মিলে পোল্যান্ড ট্যাংক সরবরাহের পদক্ষেপ নেবার হুমকি দিয়েছে৷
জার্মানি অনুমতি না দিলেও কয়েকটি দেশের সঙ্গে মিলে পোল্যান্ড ট্যাংক সরবরাহের পদক্ষেপ নেবার হুমকি দিয়েছে৷ ছবি: Michael Kappeler/dpa/picture alliance

রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে ইউক্রেনকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে চলেছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ কিন্তু কিয়েভের সব অনুরোধ সঙ্গে সঙ্গে মানছে না অনেক দেশ৷ অ্যামেরিকা, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো নেতৃস্থানীয় পশ্চিমা শক্তি এমন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সময় নিয়ে ঝুঁকি ও সম্ভাব্য পরিণাম বিবেচনা করে তবেই সামরিক সহায়তার মাত্রা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ বর্তমানে ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের ক্ষেত্রে সেই দ্বিধা ও বিলম্ব ইউক্রেনসহ সে দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে৷

অবিলম্বে ‘লেওপার্ড ২' ট্যাংক সরবরাহের জন্য জার্মানি সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে রয়েছে৷ অন্যান্য দেশ এমন ট্যাংক যাতে ইউক্রেনের হাতে তুলে দিতে পারে, কমপক্ষে সেই ছাড়পত্র দেবার জন্য চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসকে রাজি করানোর জোরালো প্রচেষ্টা চলছে৷ পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাটেউশ মোরাভিয়েৎস্কি সোমবার বলেন, তাঁর দেশ ইউক্রেনের হাতে ‘লেওপার্ড ২' ট্যাংক তুলে দিতে জার্মানির অনুমতির জন্য আবেদন করবে৷ এমনকি জার্মানি সেই অনুমতি না দিলেও কয়েকটি দেশের সঙ্গে মিলে পোল্যান্ড সেই পদক্ষেপ নেবার হুমকি দিয়েছে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক অবশ্য রোববার ফরাসি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জার্মানি এমন অনুমতি দিতে প্রস্তুত৷

শলৎসের সরকার এখনো সরাসরি ট্যাংক সরবরাহের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় নি৷ গত শুক্রবার জার্মানির রামস্টাইনে মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে পশ্চিমা শক্তিগুলির এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ইউক্রেনকে উন্নত ব্যাটেল ট্যাংক সরবরাহের প্রশ্নে ঐকমত্য সম্ভব হয়নি৷ জার্মানি এ ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে একই ধরনের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে৷ অর্থাৎ অ্যামেরিকা ও ফ্রান্সের মতো দেশ ইউক্রেনকে একই ধরনের ট্যাংক সরবরাহ করলে তবেই ‘লেওপার্ড ২' ট্যাংক হস্তান্তর করতে প্রস্তুত চ্যান্সেলর শলৎস৷ ওয়াশিংটন ও প্যারিস এখনো সেই প্রশ্নে দ্বিধায় ভুগছে৷ শলৎস সাফ বলে দিয়েছেন, জার্মানির নিজস্ব নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলে কোনো রকম সহায়তা করা সম্ভব নয়৷ উল্লেখ্য, জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও বিষয়টি নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে৷ একদল রাজনীতিক অবিলম্বে ইউক্রেনকে ট্যাংক পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করছেন৷ অন্যরা রাশিয়াকে মাত্রাতিরিক্ত প্ররোচনা করে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছে৷

শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও জার্মানি আদৌ কত ট্যাংক সরবরাহ করতে সক্ষম, সে বিষয়েও সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ তবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী গোষ্ঠী রাইনমেটাল জার্মানির আরএনডি মিডিয়া নেটওয়ার্ককে জানিয়েছে, যে তারা প্রয়োজনে ইউক্রেনকে ১৩৯টি লেওপার্ড ট্যাংক সরবরাহ করতে প্রস্তুত৷ এর মধ্যে এপ্রিল বা মে মাসের মধ্যে ২৯টি টুএফোর ট্যাংক পাঠানো সম্ভব৷ চলতি বছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে একই মডেলের আরও ২২টি ট্যাংক পাঠাতে পারে এই গোষ্ঠী৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোষ্ঠীর এক প্রতিনিধি আরও বলেন, যে ৮৮টি পুরানো ‘লেওপার্ড ১' ট্যাংকও সরবরাহ করা সম্ভব৷

ইউক্রেনকে উন্নত ট্যাংক সরবরাহের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান দ্বিধাকে দুর্বলতা হিসেবে তুলে ধরছে রাশিয়া৷ ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেন, ‘লেওপার্ড ২' ট্যাংক নিয়ে টালবাহানা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘নার্ভাসনেস' স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত' যুদ্ধ চালাচ্ছে৷ বহুকাল ধরেই সেই প্রস্তুতি চলছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)