জার্মানি থেকে আফগানিস্তানে বিতাড়ন
২০১৬ সালের মাঝমাঝি সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়া ৩৪ আফগান শরণার্থীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷ সেটা শুরু৷ এরপর মাঝখানে কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবারো বিমানে করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে তাঁদের৷
বিমানে করে ফেরত পাঠানো
গত ১২ সেপ্টেম্বর ১৫ জন শরণার্থীকে ডুসেলডর্ফ বিমানবন্দর থেকে আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা বিমানে তুলে দেয়া হয়৷ প্রত্যেকের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হয়ে গেছে৷ গত মে মাসে কাবুলে জার্মান দূতাবাসের সামনে প্রাণঘাতি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের পর আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল৷ এখন আবার শুরু হয়েছে৷ জার্মানির সবুজ দল এবং বামদল এর সমালোচনা করেছে৷
একটা সুযোগের আশায় লড়াই
গত মার্চে কটবুসের একদল শিক্ষার্থী গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়৷ তিন আফগান সহপাঠীকে যাতে ফেরত পাঠানো না হয়, সেজন্য প্রচারণা চালিয়েছিল তারা৷ এজন্য তারা বিক্ষোভ করে, স্বাক্ষর সংগ্রহ করে৷ এমনকি আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়া সেই তিন আফগান শিক্ষার্থীর পক্ষে লড়তে একজন আইনজীবী নিয়োগের অর্থও সংগ্রহ করা হয়৷ যে তিন শিক্ষার্থীর জন্য এত আয়োজন, তাদের একজনকে দেখা যাচ্ছে ওপরের ছবিতে৷
‘কাবুল নিরাপদ নয়’
‘প্রাণঘাতি বিপদের দিকে যাত্রা’, গত ফেব্রুয়ারি মাসে মিউনিখ বিমানবন্দরে প্রতিবাদস্বরুপ দেখানো এক পোস্টারে একথা লেখা ছিল৷ যেসব বিমানবন্দর থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো হয়, সেসব বিমানবন্দরে মাঝেমাঝেই হাজির হন এমন প্রতিবাদকারীরা৷ গত ডিসেম্বর থেকে মে মাস অবধি অনেক আফগান শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ চলতি বছর এখন অবধি আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে ২৬১ জনকে৷
ভ্যুর্ৎসবুর্গ থেকে কাবুল
মধ্য ত্রিরিশে পা দেয়া বাদাম হায়দারিকে সাত বছর জার্মানিতে কাটানোর পর গত জানুয়ারিতে দেশে ফেরত যেতে বাধ্য করা হয়৷ তিনি অতীতে ইউএসএইডে কাজ করেছেন এবং তালেবানের কাছ থেকে বাঁচতে জার্মানিতে এসেছিলেন৷ তালেবানের ভয় এখনো তাড়া করছে হায়দারিকে৷ তিনি আশা করছেন, শীঘ্রই হয়ত আবারো জার্মানিতে ফিরতে পারবেন৷
নিগৃহীত সংখ্যালঘু
গত জানুয়ারি মাসে আফগান হিন্দু সমীর নারাংকে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়৷ ফেরত পাঠানোর আগ অবধি তিনি জার্মানির হামবুর্গে পরিবরাসহ ছিলেন৷ জার্মান পাবলিক রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আফগানিস্তান নিরাপদ নয়৷’’ যেসব সংখ্যালঘু রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়ায় আফগানিস্তানে ফেরত যাচ্ছেন, তারা মুসলিমপ্রধান দেশটিতে সংখ্যালঘু হওয়ায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন৷
অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফিরে যাওয়া
পকেটে মাত্র বিশ ইউরো নিয়ে জার্মানি থেকে আফগানিস্তানে ফেরত যান রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে ব্যর্থরা৷ তাঁরা চাইলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংগঠন আইওএম’এর সহায়তা নিতে পারেন৷ তাছাড়া সে দেশে জার্মান অর্থায়নে তাদের মানসিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা রয়েছে৷