জার্মানিসহ পুরো ইউরোপে এবার গম চাষে ধস নামার আশঙ্কা
১৩ মে ২০১১মৌসুম এখন গম আর ভুট্টা জাতীয় ফসল চাষের৷ জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গেলে আর ক'দিন পরেই দেখা যাবে একরের পর একর গম আর ভুট্টার ক্ষেত৷ তবে এখন সময় বীজ বপনের৷ আর তার জন্য চাই ভেঁজা আবহাওয়া৷ যাতে করে বীজ থেকে আস্তে আস্তে সতেজ এবং সবল ছোট্ট চারা গাছ গজাতে পারে৷ তারপর সেই চারা মাটি থেকে নিতে পারে আদ্রতা৷ কিন্তু অবস্থা বদলে গেছে৷ এবারে অনেকটা রুঢ় আচরণ শুরু করেছে আবহাওয়া৷ আদ্র এবং ভেজা মাটি পাচ্ছে না গমবীজ৷ ফলে কৃষিবিদরা বলছেন, আশানুরূপ ফসল উৎপাদনের কোনো সম্ভাবনা তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না৷
এদিকে যদি এ বছর ভালো গম বা ভুট্টার উৎপাদন না হয়, তাহলে তা সরাসরি আঘাত ফেলবে ভোক্তাদের ওপর৷ ভুলে গেলে চলবে না, ইউরোপীয় দেশগুলোর উৎপাদিত ফসলের মধ্যে আঙ্গুরের পরই সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় গম৷ পৃথিবীর মোট গম উৎপাদনের পাঁচ ভাগের এক ভাগই জন্মায় এখানে৷ কিন্তু এবার হয়তো সেই পরিমাণে আর উৎপাদিত হবে না গম৷
ব্রিটিশ কৃষি গবেষণা গ্রুপ এইজিসিএ'র গবেষক ডেভিড ইউডাল ডয়চে ভেলেকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই সময়ে বৃষ্টির খুব প্রয়োজন৷ কিন্তু এ ক্ষেত্রে সমস্যা কেবল একটি নয়, আরও আছে৷ যেমন চরম গরম আবহাওয়াও ক্ষতি করছে গম উৎপাদনে৷ এই অবস্থায় যে কেবল উৎপাদনই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাই নয়, এবার গমের মানও হবে নিম্নমুখী৷ ফরাসি সরকারের কৃষি বিভাগও এবার প্রচণ্ড চিন্তার মধ্যে পড়ে গেছেন৷ আর জার্মানির অবস্থাও তথৈবচ৷ গত বেশ কিছুদিন ধরে শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে এখানে৷ বৃষ্টির দেখা মিলছে না বললেই চলে৷ জার্মান কৃষক সমিতি জানিয়েছে, এর ফলে বেশ কিছু ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে৷ গমও সেগুলোর মধ্যে একটি৷
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুট্টা এবং গমের উৎপাদন যদি এবার কম হয়, মান যদি ভালো না হয়, তাহলে এর প্রভাব পড়বে খুচরো বাজারে৷ ফলে নিত্যদিনের খাবারের দাম অত্যাবশ্যকীয় ভাবে বেড়ে যাবে৷ যা আঘাত করবে পুরো অর্থনীতির উপর৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ