রাজনীতি জগতে অশনিসংকেত
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৩জার্মানির দলীয় রাজনীতির আঙিনা অনেকটা অভিজাতদের ক্লাবের মতো৷ সেই ক্লাবের সদস্য হতে গেলে নির্বাচনে ৫ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়৷ তা না হলে সংসদে আসন পাওয়া যায় না৷ ফলে ভারত-বাংলাদেশে যেমন মুড়ি-মুড়কির মতো দল গড়ে সংসদে একটি-দুটি আসন দখল করা যায়, জার্মানিতে সেটা সহজে সম্ভব নয়৷ তার পরেও অঘটন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে৷ প্রতিষ্ঠিত দল ৫ শতাংশের কম ভোট পেয়ে সংসদে স্থান পেল না, আবার সদ্য গজিয়ে ওঠা কোনো দল এক ধাক্কায় ৫ শতাংশের বেশি ভোট পেল – এটাও হতে পারে৷
২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে এমন একটা সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে৷ বর্তমান সরকারের শরিক দল এফডিপি আদৌ সংসদে প্রবেশ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে যেমন সন্দেহ দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে ‘আল্টারনাটিভে ফ্যুর ডয়েচলান্ড' বা জার্মানির বিকল্প নামের নতুন একটি দল সংসদে প্রবেশ করতে পারে – এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে৷ দলটির আদর্শ মোটামুটি রক্ষণশীল বলা চলে৷ তবে তাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে – ইউরোপীয় অভিন্ন মুদ্রা ‘ইউরো' এলাকা থেকে জার্মানির বেরিয়ে যাওয়া উচিত৷ তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নে জার্মানির সক্রিয় ভূমিকা বজায় রাখার পক্ষে এএফডি৷
অত্যন্ত বিতর্কিত প্রস্তাব, কোনো সন্দেহ নেই৷ বাস্তবে জার্মানির পক্ষে ইউরো এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যাবার ঘটনাও অকল্পনীয়৷ তবে জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী ভোটারদের একটা অংশ এই দলের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে৷ রবিবারের নির্বাচনে এএফডি যদি সত্যি ৫ শতাংশের বেশি সমর্থন পায়, সে ক্ষেত্রে জার্মানির দলীয় রাজনীতি জগতে তোলপাড় কাণ্ড ঘটে যাবে৷ সংসদের ভারসাম্য এতটাই টলে যাবে, যে বাকি দলগুলির পক্ষে সরকার গড়া বা না গড়ার ক্ষমতা বদলে যেতে পারে৷ বর্তমান সরকারি জোটের পক্ষে নতুন সরকার গড়া সম্ভব হবে না৷ এমনকি আরও কিছু সরকারি জোট অসম্ভব হয়ে উঠবে৷
শুধু তাই নয়, সংসদে বাকি দলগুলির পক্ষে নতুন এই দলের সঙ্গে সহযোগিতার পথও কণ্টকিত হবে৷ এএফডি-র শীর্ষ নেতা ব্যার্ন্ড লুকে-ও কড়া অবস্থান নিচ্ছেন৷ তিনি বলে দিয়েছেন, ইউরো এলাকার সুরক্ষার নীতি গ্রহণ করলে তিনি কোনো দলের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন না৷
এএফডি-র মতো দল জার্মান সংসদে প্রবেশ করলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চালিকা শক্তি ও ইউরো এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে জার্মানির ভাবমূর্তিও বিশাল ধাক্কা খাবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফডি)