জার্মানিতে সমকামী অভিবাসীদের কথকথা
২১ জানুয়ারি ২০১১সমকামীদের জন্য তৈরি বিভিন্ন সংস্থা এবং সমকামী মানুষরা বিশ্বাস করেন যে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে সমকামী প্রবণতা খুব সামান্য পরিমাণ হলেও রয়েছে৷ অনেকেই তাঁদের সমকামী প্রবণতা সব সময় পুরোপুরি খুলে ধরতে পারন না৷ আবার অনেক ক্ষেত্রে লুকিয়েও রাখতে পারেন না৷
সম্প্রতি বার্লিনের রবার্ট শুমান স্কুলে সমকামীদের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নওয়া হয়েছে৷ প্রকল্পটিকে আর্থিকভাবে সাহায্য করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ প্রকল্পের নাম ‘কমিউনিটি গে গেম্স'৷ এই প্রকল্পের আওতায় সমকামীদের বোঝানো হচ্ছে – সমকামী হয়েও স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করা সম্ভব৷ সমাজের সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা, চলাফেরা করা সম্ভব৷ আর যারা সমকামী নয়, তাদেরও শেখানো হচ্ছে কীভাবে একজন সমকামীকে সহজভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে৷
ক্রিস্টিন টেসকে তাঁর ক্লাসের ২১জন ছেলে-মেয়েকে সমকামিতা নিয়ে বোঝাচ্ছেন৷ বিষয়টি সহজ নয়৷ কারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সকলেই অভিবাসী৷ পশ্চিমা বিশ্বে সমকামিতা নিয়ে যতো খোলাখুলি আলাপ-আলোচনা করা যায়, অন্যান্য দেশে তা সম্ভব নয়৷ এরপরও, তিনটি ছবির মাধ্যমে টেসকে বোঝাতে চাচ্ছেন সমকামিতা আসলে কী!
প্রথম ছবিতে দেখানো হচ্ছে দু'জন মহিলা একে-অপরকে চুমু খাচ্ছে৷ দ্বিতীয় ছবিতে দু'জন পুরুষ এবং তৃতীয় ছবিতে একজন পুরুষ আর একজন মহিলা৷ কোন ছবিটি আলাদা? এই প্রশ্নই তিনি ছুঁড়ে দিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে৷ আর উপস্থিত প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীরই উত্তর, ‘তৃতীয় ছবিটি স্বাভাবিক বাকি দুটো ছবি নোংরা'৷ অবশ্য এ ধরণের বাস্তব-চিত্র হামেশাই পথে ঘাটে দেখছে বা দেখেছে সকলে৷
টেসকের সেই ক্লাসে শেখানো হচ্ছে – কেউ যদি বলে, হ্যাঁ, আমি সমকামী – তাহলে কীভবে তাঁকে গ্রহণ করা হবে৷ তাঁর সঙ্গে কীভাবে মেশা হবে৷ এবং কেন তাঁকে অবহেলা করা হবে না৷
রবার্ট শুমান স্কুলের পরিচালক গ্যাব্রিয়েলে মুল জানান, তুর্কি বা আরব বংশোদ্ভূত মানুষদের জন্য সমকামিতা মেনে নেওয়া কঠিন৷ তাঁদের বোঝানো কঠিন যে, কেউ ইচ্ছে করে বা ইচ্ছে হলেই সমকামী হয় না৷ সাধারণত, তাঁরা এই বোধটি নিয়েই জন্মগ্রহণ করে৷ তাই জার্মান সমাজে সমকামিতা নিয়ে খোলাখুলি আলাপ-আলোচনা করা হলেও, একটি রক্ষণশীল সমাজে কিন্তু ঠিক ততোটাই বিষয়টি গোপন রাখা হয়৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ