1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে মুসলমান মেয়েদের জন্য সাময়িকী

৪ ডিসেম্বর ২০১০

‘মুসলিম নারী’ বলতে ইউরোপে অনেকের মনেই ভেসে উঠবে মাথা স্কার্ফে ঢাকা বা বোরখা পরা মহিলার ছবি৷ এর জবাব দিতে জার্মানিতে বের হয়েছে মুসলমান নারীদের জন্য সাময়িক পত্র ‘ইমরাহ’৷

https://p.dw.com/p/QPfO
জার্মানিতে বসবাসরত মুসলিম নারীছবি: AP

মুসলিম মেয়েরা পরিবারের ভিতরে নানা অত্যাচার অবিচারের মুখে জীবন কাটাচ্ছে তা ফুটিয়ে তুলতে তৎপর বার্তা মাধ্যম৷ অথচ কোন মুসলমান নারী যদি ক্যারিয়ার, স্বামী-সংসার নিয়ে সুখে থাকে তা নিয়ে কোন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় না৷

‘ইমরাহ' সাময়িক পত্রিকার প্রথম কপির প্রচ্ছদে দেখা যাবে অত্যন্ত আধুনিক এক মুসলিম তরুণীর ছবি৷ গাড় নীল রঙের স্কার্ফ দিয়ে মাথা ডাকা, পরনে নীল বুটি দেওয়া পা-পর্যন্ত লম্বা পোশাক৷ ফ্যাশন শো-র মেয়েদের মতই পোজ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটি৷ মেক-আপেরও কমতি নেই৷ চেহারায় আত্মবিশ্বাস ঝকঝক করছে৷

জার্মানিতে এই প্রথম মুসলিম বংশোদ্ভূত মেয়েদের জন্য কোন পত্রিকা বাজারে এসেছে৷ শুধু জার্মান নয় ইংরেজি বেশ কিছু প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে ইমরাহ-তে৷ এই প্রথম একটি পত্রিকাতে দুটি ভাষায় প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে৷ যারা জার্মান জানে না তাদের জন্য ইংরেজি আর যারা ইংরেজি জানে না তাদের জন্য জার্মান প্রতিবেদন৷

‘ইমরাহ' আরবি শব্দ৷ এর অর্থ নারী৷ ইমরাহ সাময়িকীতে শুধু রান্না আর সাজ-গোজের বিষয় নিয়ে লেখালেখি করা হয় না বরং জার্মানিতে তথা ইউরোপে মুসলমানদের বিভিন্ন সমস্যার কথাও উল্লেখ থাকে৷ জার্মান সমাজে তাদের একাত্ম হওয়ার ইস্যু নিয়ে বিতর্ক, তাদের বিভিন্ন সমস্যা – সবকিছুই তুলে ধরা হয়েছে ‘ইমরাহ'-তে৷

10. Tag der Offenen Moschee 2006 Moschee in Kreuzberg
মুসলিম নারীদের সুখি জীবনের ছবি তুল ধরবে ‘ইমরাহ'ছবি: AP

‘ইমরাহ'-র সম্পাদক কোন আরব বা তুর্কি নারী নন৷ তিনি একজন জার্মান নারী – সান্ড্রা আডেওয়ে৷ সান্ড্রার মা জার্মান আর বাবা নাইজেরিয়ার৷ তিনি মুসলিম নারীদের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর৷ কারণ তিনি দেখেছেন, অনেক মুসলমান মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে স্বামী সংসার নয় বরং চাকরি বা ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে৷ তারা নিজেদের আরব বা তুর্কি হয়ে থাকার চেয়ে জার্মানই মনে করছে বেশি৷ বেশ জোর দিয়েই তারা জানাচ্ছে, তারা জার্মান, জার্মানি তাদের দেশ, জার্মান তাদের মাতৃভাষা৷

সান্ড্রা আডেওয়ে আধুনিক মুসলমান নারীর ছবি তুলে ধরতে চান সবার সামনে৷ তিনি জানান, ‘‘ বিভিন্ন ধরণের পত্র-পত্রিকা এবং প্রচার মাধ্যমগুলোতে ইসলাম ধর্মকে শুধু তুলে ধরা হয় নেতিবাচকভাবে৷ আমি তা পাল্টাতে চাই৷ মুসলিম মেয়ে মানেই জোর করে তাঁকে হিজাব পরানো হয়েছে – আমি বলতে চাই তা সত্যি নয়৷ আমি এসব মহিলাকে সাহায্য করতে, আমি ইসলাম ধর্মের প্রকৃত রূপ তুলে ধরতে চাই৷''

অল্প সংখ্যক কিছু সহকর্মী নিয়ে সম্পাদিকা সান্ড্রা শুরু করেছেন তাঁর যাত্রা৷ ইসলাম ধর্ম নিয়ে তথাকথিত যে সব বিশ্বাস এবং ধারণা প্রচলিত তা তিনি ভাংতে চান৷ মুসলিম দেশগুলোতে যে সব বিষয় নিয়ে কথা বলা নিষিদ্ধ তা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন৷ ইমরাহ-র প্রচ্ছদের মেয়েটির মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন একটি মেয়ে একই সঙ্গে অত্যন্ত আধুনিক এবং অত্যন্ত ধার্মিক হতে পারে৷ সান্ড্রা আরো বলেন,‘‘ ইমরাহ অত্যন্ত আধুনিক একটি পত্রিকা একারণেই যে, এখানে আধুনিক জীবন-যাপনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বলা হয়েছে৷ আগে দেখা যেত একটি মেয়ে কোন রকমে স্কুল শেষ করে অপেক্ষা করছে কবে তার বিয়ে হবে, স্বামী হবে এবং সংসার নিয়ে সে মেতে থাকবে৷ দিন পাল্টেছে৷ এখন কোন মেয়েই এভাবে নিজেকে দেখে না৷ আমরা বেশ কিছু মহিলার সাক্ষাৎকার তুলে ধরেছি যারা পেশাগত জীবনে অত্যন্ত সফল৷ তারা কোন ধরণের চাপ বা বৈষম্যের সম্মুখীন হননি তাদের জীবনে৷ এসব মহিলাই অন্যান্যদের স্বাবলম্বী হতে প্রেরণা যোগাবে বলে আমাদের বিশ্বাস৷''

‘ইমরাহ' সাময়িকী শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেনা যাচ্ছে৷ ইমরাহ-র প্রথম কপি ছাপা হয়েছে আড়াই হাজার৷ এর পাশাপাশি এসেছে ইন্টারনেট অর্ডার৷ তবে সম্পাদিকা আশাবাদী৷ কিছুদিনের মধ্যে ইমরাহ যে কোন পত্রিকার দোকানেও পাওয়া যাবে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক