জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪জার্মানিতে একদিকে প্রতি সপ্তাহেই চলছে উগ্রডানপন্থি মতাদর্শবিরোধী বিক্ষোভ, অন্যদিকে কমছে জোট সরকারের জনপ্রিয়তা৷ আইএনএসএ ইন্সটিটিউটের গত সপ্তাহের জনমত জরিপ অনুযায়ী, চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবং প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের সামাজিক গণতন্ত্রী (এসপিডি) দলের পাশে আছে ১৪% এবং ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেকের সবুজ দলের পাশে আছে মাত্র ১৩% মানুষ৷ তবে আরেক জোট শরিক বাণিজ্য-বান্ধব এফডিপি দলের গ্রহণযোগ্যতা এ মুহূর্তে এতটাই কম যে এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে সংসদেই থাকতে পারবে না৷ সর্বশেষ জনমত জরিপে মাত্র ৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেয়েছে এফডিপি৷ জার্মানিতে ৫%-এর কম ভোট পাওয়া দল সরকারে থাকা তো দূরের কথা, সংসদেই যেতে পারে না৷
এ পরিস্থিতিতেও স্টাইনমায়ারকে আনন্দ প্রকাশের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে সপ্তাহান্দের উগ্র ডানপন্থি মতবাদবিরোধী বিক্ষোভ৷
‘গণতন্ত্র রক্ষা'র উদ্দেশ্যে উগ্র ডানপন্থাবিরোধী এমন গণবিক্ষোভ গত ১৩ জানুয়ারি থেকে প্রতি সপ্তাহান্তেই হয়ে আসছে জার্মানিতে৷ নতুন বছরের দ্বিতীয় সপ্তাহান্তে এ বিক্ষোভ সমাবেশের সূচনাটা হয়েছিল অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক গণমাধ্যম কারেক্টিভ-এ প্রকাশিত চাঞ্চল্যকর এক খবরের প্রতিক্রিয়ায়৷ কারেক্টিভের সেই খবরে দাবি করা হয়, এএফডির কয়েকজন সদস্যসহ জার্মানির ডানপন্থি মতাদর্শের কিছু মানুষ এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর কৌশল নির্ধারণের জন্য আলোচনা করেছেন৷
রবিবার সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ সমাবেশটি হয়েছে জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শহর ভল্ফসবুর্গে৷ ছয় হাজারের মতো মানুষ অংশ নেন সেই সমাবেশে৷
এছাড়া হানোফার, মাগডেবুর্গ, বোখুম, রিটবার্গ, এসেন এবং বেশ কিছু ছোট শহরে এমন সমাবেশ হয়৷ মাগডেবুর্গের সমাবেশে সাক্সনি-আনহাল্ট রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রাইনার হাসেলফও উপস্থিত ছিলেন৷ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে খ্রিষ্টীয় গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর নেতা বলেন, ‘‘যেখানেই বর্ণবাদ এবং অমানবিকতা দেখা দেবে- তার রূপ যেমনই হোক না কেন, আমাদের সবাইকে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷''
রবিবার সারা দেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷
সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আজ আবার হাজার হাজার তরুণ এবং প্রবীণ, (তাদের মধ্যে) অনেকে সপরিবারে শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হবেন৷ আমরা সবাই এ সমাবেশের পক্ষে, কারণ, আমরা মিলেমিশে স্বাধীনভাবে সসম্মানে বাঁচতে চাই৷''
তিনি আরো বলেন, এসব সমাবেশ ঘৃণা, সহিংসতা এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে সকলের জোরালো প্রতিবাদ৷
লাগাতার বিক্ষোভ সমাবেশের কিছুটা প্রভাব এএফডির জনপ্রিয়তাতেও পড়েছে৷ আইএনএস-এর জনমত জরিপ অনুযায়ী জার্মান সংসদের ডানপন্থি এই বিরোধী দলকে এই মুহূর্তে মাত্র ১৯% ভাগ মানুষ চায়৷ ২০২৩ সালের জুনের পর এই প্রথম জরিপে এত কম সমর্থন পেলো এএফডি৷ সেই তুলনায় বেশ ভালো অবস্থা সিডিইউ এবং তাদের বাভারিয়ান সহযোগী সংগঠন সিএসইউ-এর৷ তাদের সমর্থন জানিয়েছে জরিপে অংশ নেয়া ৩১% ভাগ মানুষ৷ এএফডির সমর্থন (১৯%) এই দুই দলের যৌথ সমর্থনের চেয়ে অনেক কম হলেও জোট সরকারের তিন শরিক এসপিডি (১৪%), গ্রিন (১৩%) এবং এফডিপি (৪%)-র চেয়ে এখনো বেশি৷
এসিবি/কেএম (এএফপি, কেএনএ)