জার্মানিতে নারী সমকামী শরণার্থীদের দুর্দশা
১৮ মার্চ ২০১৯‘‘আমি জানিনা তারা কী চায়,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন ডিয়ানা নামুসোকা৷ হতাশ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি না তারা কেন আমাদের কথা বিশ্বাস করছে না৷''
বার্লিনের ক্রয়েৎসবার্গের এক গির্জার বৈঠকখানায় ডয়চে ভেলের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা৷ ৪৮ বছর বয়সি নামুসোকা এবং ২৭ বছর বয়সি জনসনের বাড়ি যথাক্রমে উগান্ডা এবং নাইজেরিয়ায়৷ এই সমকামীরা জার্মানিতে এসেছিলেন নিরাপদ জীবনযাপনের আশায়৷ নিজেরা যে সমকামী সে-কথা শুরুতেই জার্মান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তাঁরা৷ কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথা বিশ্বাস করেনি৷ বরং তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে মত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
জার্মানির অভিবাসন এবং শরণার্থী বিষয়ক কার্যালয় বিএএমএফ এবং সংশ্লিষ্ট আদালত আপিল করেছিলেন তাঁরা৷ তবে বিএএমএফ বিশ্বাস করে যে, এই দুই নারী সমকামী৷ বিএমএফ জানিয়েছে, নিজেদের সমকামিতার পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি বলে তাঁদের আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷
বাভারিয়াতে আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়ার পর তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু সেই আদেশ কার্যকর হওয়ার আগেই গতবছরের নভেম্বরে বাভারিয়া থেকে পালিয়ে বার্লিন চলে আসেন আফ্রিকার এই দুই নারী৷ বার্লিনে দু'টি ‘গির্জা সম্প্রদায়' তাঁদের আশ্রয় দিয়েছে৷
নামুসোকা এবং জনসন অল্পবয়সেই বুঝতে পারেন যে, তাঁরা সমকামী৷ তাঁদের পরিবার বিষয়টি না জানা অবধি তেমন একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁদের৷ কিন্তু পরিবারের সদস্যরা জানার পর আর তাঁদের পক্ষে বাড়িতে থাকা সম্ভব হয়নি৷ সমকামিতার জন্য নিজ নিজ দেশে হয়রানির শিকারও হয়েছেন তাঁরা, কেননা, দেশ দুটোতে সমকামিতাকে এখনো স্বাভাবিকভাবে নেয়া হয় না৷
ফলে এক পর্যায়ে ইউরোপে পাড়ি জমান তাঁরা৷ এবং নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে জার্মানিতে পৌঁছান৷ কিন্তু বাভারিয়া কর্তৃপক্ষ তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল করায় ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এই সমকামীরা৷
লুইসা রোলেনহাগেন/এআই