1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিপদে দরিদ্র জনগোষ্ঠী

২৩ জানুয়ারি ২০২২

জার্মানিতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে ভোক্তাদের৷ ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি এটি৷ এর ফলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে৷

https://p.dw.com/p/45yIR
জার্মানিতে দ্রব্যমূল্য বাড়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উপর চাপ বাড়তে পারে ছবি: Jens Büttner/dpa-Zentralbild/dpa /picture alliance

একদিকে জাঁকিয়ে শীত, অন্যদিকে বৃষ্টি, তার মধ্যেই পশ্চিম জার্মানির বন শহরের একটা খাবারের দোকানের (টাফেল) সামনে তাঁবু খাটিয়ে অপেক্ষা করছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা৷ টাটকা সবজি, ফল ও অন্য জরুরি জিনিস পাশের সুপারমার্কেট থেকে নিয়ে এসেছেন তারা৷ অবসরকালীন সামান্য ভাতা পান এমন ব্যক্তি, বেকার এবং স্থানীয় গরিব মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হবে বেঁচে যাওয়া বেশ কিছু খাবার, যদিও এগুলো বাজারে বিক্রির মতো টাটকা নয়৷

টাফেলের এক স্বেচ্ছাসেবী গুন্টার গিজা ডয়চে ভেলেকে বলেন, মাসের শেষে নিঃস্ব মানুষজন এসে জিজ্ঞাসা করছেন, আরও একটু বেশি খাবার পাওয়া সম্ভব কি না৷ বোঝাই যাচ্ছে, এই মূল্যবৃদ্ধি উদ্বেগজনক, যা কোনওভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়৷ 

কয়েক দশকের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেনি

বুধবারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে ৩.১ শতাংশ৷ এই মূল্যবৃদ্ধি ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে৷

বিশ্বজুড়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে৷ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এর একটা বড় কারণ৷ মহামারির নিয়ন্ত্রণবিধি উঠে যাওয়ায় জ্বালানির চাহিদা বেড়েছে৷ পাশাপাশি, ওপেক গোষ্ঠী ধীরে ধীরে মহামারির আবহের ক্ষতির দিকগুলো পুনরুদ্ধার করা শুরু করেছে৷

জ্বালানি ব্যবহারের বাড়তি খরচ, সামগ্রিক উত্পাদন ব্যয়কে বাড়িয়ে তুলছে৷ নির্মাতারা বলছেন, এটি প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্দিষ্ট করা কঠিন করে তুলেছে৷ মূল্যবৃদ্ধির জেরে গ্রাহকদের নাভিশ্বাস উঠেছে, এদিকে ব্যবসায়ীরাও কূল পাচ্ছেন না৷

করাতের ব্লেড নির্মাতা সংস্থার এক কর্মকর্তা হেইনো বুডেনবার্গ বলেন, ‘‘১৯৫০ সাল পর্যন্ত বস্ত্রশিল্প জার্মানি বেশ উন্নত ছিল, ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ ব্যবসা এশিয়ায় চলে যায়৷ আমাদের শিল্পের ক্ষেত্রেও এমনটা হোক তা আমি চাই না৷'' 

অতীতের ক্ষত

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হেরে যাওয়া এবং তারপর ১৯২৩ সালে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির ফলে দৈনিক হারে অর্থ দেওয়া হত কর্মীদের৷ অর্থের মূল্য কমে যাওয়ার আগে গিয়ে জিনিসপত্র কিনে ফেলতে ছুটোছুটি করতে হত সেইসময়৷ এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সংকটে ভুগেছে জার্মানি৷

মার্কিন অর্থনীতিবিদ এবং নোবেলজয়ী রবার্ট শিলারের মতে, তাত্ত্বিক মূল্যবৃদ্ধির ভীতিও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে৷ বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি যথেষ্ট উদ্বেগজনক৷ বিপদে পড়তে পারেন অনেকে৷

টাফেলের স্বেচ্ছাসেবী  গিজা ডয়চে ভেলেকে জানান,  ৮০ ইউরোর বদলে ১০০ ইউরো দিতে হচ্ছে গ্যাস স্টেশনে৷ দরিদ্র মানুষজন ভাবছেন, পাউরুটি কেনা লাভজনক হবে নাকি সেই টাকায় দুধ কিনবেন৷ সব জিনিসের দাম বেড়ে গিয়েছে৷

ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক (ইসিবি) উচ্চ সুদের হার দিয়ে মূল্যবৃদ্ধিকে সামলানোর ধারণায় বিশ্বাসী নয়৷ ইসিবির মতে, মহামারির ফলে সরবরাহের সমস্যাগুলির সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধির যোগ রয়েছে, তবে এটি অস্থায়ী৷

প্রতিবেদন: ক্রিস্টি প্লাডসন/আরকেসি