জার্মানিতে ঘুস দিয়ে বৈধ হচ্ছেন উদ্বাস্তুরা?
২২ মে ২০১৮ব্রেমেনে ঘুসের বিনিময়ে আবেদন মঞ্জুরের অভিযোগ আগেই দ্য ফেডারেল অফিস ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি (বিএএমএফ)-তে জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে জার্মানির সংবাদ মাধ্যম৷
জার্মান পত্রিকা ডেয়ার স্পিগেল দাবি করেছে, ২০১৭ সালে জার্মান কেন্দ্রীয় অভিবাসন দপ্তর বিএএমএফ-এর প্রধান উটা কর্ড্ট -এর কাছে পাঠানো অভিযোগের ই-মেল বার্তায় ‘প্রচুর অনিয়ম’ এর তথ্যটি তারা দেখেছে৷ ই-মেলগুলো অভিবাসন দপ্তরের ভেতরই চালাচালি হয়েছিল৷
এনডিআর এবং স্যুদডয়চে সাইটুং এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও বিএএমএফ ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে নির্বিকার ছিল৷
দুটি সংবাদমাধ্যমই একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান কর্মকর্তার ই-মেল-এর সূত্র ধরে বলেছে, জার্মানিতে আশ্রয়প্রার্থীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজটি ‘কোনও যাচাইবাছাই ছাড়া’ এবং বিস্তারিত খোঁজ-খবর না নিয়েই হয়েছে৷
পত্রিকার প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিএএমএফের পক্ষ থেকে অবশ্য এ ধরনের ই-মেইল পাওয়ার কথা অস্বীকার করা হয়েছে৷
ন্যুরেমব্যার্গে বিএএমএফ-এর কেন্দ্রীয় দপ্তরে রোববার সংস্থাটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় অফিসে যে ই-মেল এসেছে, তাতে ‘সবকিছু নিরীক্ষা করা হচ্ছে না’ বা ‘কোনও যাচাই-বাছাই হচ্ছে না’ ধরনের কথা ছিল না৷’’
‘‘কর্ড্টর কাছে মেলটিতে এক বিভাগীয় প্রধান কেবল জানিয়েছেন, ব্রেমেনের অফিসে আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন নিয়ে সম্ভবত দুর্নীতি হচ্ছে৷’’
এই তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই কেন্দ্রীয় অফিস কাজ শুরু করেছে বলে দাবি করেন তিনি৷
শুক্রবার বিএএমএফ প্রধান জার্মান সংসদীয় কমিটির কাছে ব্রেমেন অভিবাসন অফিসের বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ই-মেল বার্তাগুলো চালাচালির কথা সেখানে উল্লেখ ছিল না বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দাবি করা হয়েছে৷
এ বছরের এপ্রিলে ব্রেমেন অভিবাসন অফিসের একজন নারী কর্মকর্তার দুর্নীতি বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দেয়া হয়৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, অন্য চার কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ১২০০ শরণার্থীকে জার্মানির অভিবাসন প্রক্রিয়ায় বৈধ করার ব্যাপারে ঘুষ নেয়া৷ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বৈধ হওয়া ওইসব শরণার্থীর জার্মানিতে অভিবাসনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার ঘাটতি ছিল৷
বিএএমএফ প্রধান উটা কর্ড্ট জানান, ২০০০ সাল থেকে ব্রেমেনের অফিস মোট ১৮ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে৷
আগামী তিন মাসে ওইসব সিদ্ধান্তই আবার খতিয়ে দেখা হবে বলে শুক্রবার জানান তিনি৷
ন্যুনতম যোগ্যতা পূরণ না হওয়া সত্ত্বেও ১০ শতাংশের বেশি শরণার্থীকে বৈধতা দেওয়া দপ্তরগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই তদন্ত চলবে বলে জানানো হয়৷
অভিযোগ ওঠার পর নাগরিকদের মধ্যে পরিচালিত ডি ভেল্ট পত্রিকার এক জরিপে অভিবাসন দপ্তর নিয়ে নাগরিকদের অনাস্থার চিত্রই ফুটে উঠেছে৷
সোমবার ওই জরিপের ফলে দেখা যায়, উত্তরদাতাদের মাত্র ৯ শতাংশ অভিবাসন অফিসের দেওয়া শরণার্থী বৈধকরণ সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সঠিক মনে করেন৷ এর বিপরীতে ৮০ শতাংশ একেবারেই বিএএমএফ-এর সিদ্ধান্ত সঠিক ও বৈধ নয় বলেই মনে করেন৷
এইচআই/এসিবি (ডিপিএ, কেএনএ,এএফপি)
গত জুলাইয়ের ছবিঘরটি দেখুন...