জার্মানিতে করোনা মোকাবিলা নিয়ে দলীয় কোন্দল
১৮ নভেম্বর ২০২১করোনা সংকটের শুরু থেকে জার্মানির মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি সার্বিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে৷ খুঁটিনাটী বিষয়ে মতপার্থক্য সত্ত্বেও দেশের স্বার্থে সংকীর্ণ রাজনীতির উদাহরণ তেমন দেখা যায়নি৷ বেড়ে চলা সংক্রমণ মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্কের মাঝে এবার সেই ঐকমত্যে স্পষ্ট ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে৷ বিশেষ করে বিদায়ী সরকারের প্রধান শরিক আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির সম্ভাব্য নতুন সরকারের প্রস্তাবিত পদক্ষেপের জোরালো বিরোধিতা করছে৷
বৃহস্পতিবার সেই সংঘাত মতুন মাত্রা পাচ্ছে৷ এ দিন সংসদের নিম্ন কক্ষে সম্ভাব্য সরকারের শরিক দল সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দল সংক্রমণ সুরক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে ভোটাভুটির উদ্যোগ নিচ্ছে৷ অন্যদিকে বিদায়ী চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা জরুরি বৈঠকে বসছেন৷ করোনা সংক্রমণের অস্বাভাবিক হারে রাশ টানতে অবিলম্বে কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে ঐকমত্য সম্ভব না হলে সংসদের উচ্চ কক্ষে কোনো প্রস্তাব পাশ করানো কঠিন হয়ে উঠতে পারে৷ বিশেষ করে ইউনিয়ন শিবিরের নেতৃত্বে রাজ্য সরকারগুলি নিম্ন কক্ষের প্রস্তাব অনুমোদন নাও করতে পারে৷ ১৬টির মধ্যে ১০টি রাজ্যেই এই রাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতায় রয়েছে৷
করোনা সংকটের শুরুতে জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারের হাতে বাড়তি ক্ষমতা দিতে যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, ২৫শে নভেম্বর তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ সম্ভাব্য সরকার নতুন করে সেই মেয়াদ না বাড়িয়ে বিকল্প পদক্ষেপের প্রস্তাব দিচ্ছে৷ গোটা দেশের জন্য একক বিধিনিয়মের বদলে রাজ্য সরকারগুলির হাতে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দিতে চায় তারা৷ তাছাড়া আদালতে এমন পদক্ষেপ যাতে চ্যালেঞ্জ না করা যায়, সেটাও নিশ্চত করতে চায় এই তিন দল৷ ইউনিয়ন শিবির তার বিরোধিতা করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশজুড়ে আরও কড়া পদক্ষেপের দাবি করছে৷ সবুজ দলের নেতা রোব্যার্ট হাবেক ইউনিয়ন শিবিরকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যে উচ্চ কক্ষে আইনের খসড়া অনুমোদন না করলে জার্মানিতে মহামারি মোকাবিলার কোনো আইনি ভিত্তি আর থাকবে না৷ দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মূল্যবান সময় নষ্ট করার অভিযোগ করছেন৷
বুধবার রাতে জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের প্রধান লোটার ভিলার রাজনৈতিক টালবাহানার তীব্র সমালোচনা করে জার্মানিতে ভয়াবহ এক পরিস্থিতির পূর্বাভাস দিয়েছেন৷ তার মতে, বেড়ে চলা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র এখনো স্পষ্ট নয়৷ বাস্তবে সংক্রমণের হার আরও বেশি বলে তিনি আশঙ্কা করছেন৷ তার ধারণা, সংক্রমণের হার দুই থেকে তিন গুণ হতে পারে৷ এমন জরুরি অবস্থায় ওষুধের দোকানেও করোনা টিকা দেবার ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি৷ উল্লেখ্য, প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার বৃহস্পতিবার ৩৩৬ পেরিয়ে গেছে৷ জার্মানির একাধিক হাসপাতালের আইসিইউ ভরে যাওয়ায় নতুন করে রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না৷ বাভেরিয়া থেকে কিছু রোগীকে ইটালিতে পাঠাতে হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)