জার্মানরা ভ্রমণ ক্লান্ত নয়, সতর্ক
৯ মার্চ ২০১৬বার্লিনে শুরু হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পর্যটন মেলা৷ আর এই মেলাকে ঘিরে জানা যাচ্ছে পর্যটন খাতের হালনাগাদ তথ্য৷ জার্মান পর্যটন শিল্প জানিয়েছে, নিরাপত্তা এখন এক বড় ইস্যু৷ পর্যটকরা এখন কিছু জায়গায় যেতে চাচ্ছেন না নিরাপত্তার কারণে৷ অথচ সেগুলো গতবছর পর্যন্ত পর্যটকদের কাছে ছিল বিশেষ আকর্ষণ৷ অবস্থা এমন যে, গতবছরের তুলনায় এবছর আগাম বুকিং সংখ্যা কমতির দিকে৷
পরিসংখ্যান বলছে, সন্ত্রাসবাদের কারণে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের প্রতি, বিশেষ করে মিশর, টিউনিশিয়া এবং তুরস্কে জার্মান পর্যটকদের যাবার আগ্রহ অনেক কমে গেছে৷ আগামী গ্রীষ্মে তুরস্ক ভ্রমণের আগ্রহীর সংখ্যা গতবছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে৷
প্রসঙ্গত, আইটিবিতে চলতি বছরের পার্টনার দেশ হচ্ছে মালদ্বীপ৷ কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, সেখানেও পর্যটকদের যাওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে৷ নিরাপত্তা এক বড় কারণ৷ তবে সেদেশের পর্যটন মন্ত্রী মুসা জামার তাঁর দেশে নিরাপত্তার কোন ঝুঁকি আছে বলে মনে করছেন না৷ বরং তিনি মনে করছেন, মালদ্বীপের সুনাম নষ্ট করতে নিরাপত্তা ঝুঁকির রাজনৈতিক প্রচারণা চালানো হচ্ছে৷
অবশ্য তাসত্ত্বেও আশা দেখছে জার্মানির পর্যটন খাত৷ কেননা, জার্মানরা আগের চেয়ে আরো অনেক বেশি পর্যটনের দিকে ঝুঁকছে৷ গতবছর জার্মানরা সবমিলিয়ে ১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন দিন ভ্রমণ করেছেন৷ অর্থাৎ একজন জার্মান গড়ে ২১দিন বাড়ির বাইরে অন্যত্র ভ্রমণ করেছেন৷ পাশাপাশি জার্মানিতে হোটেলে রাত্রিযাপনের সংখ্যা গতবছর ছিল ৪৩৬ মিলিয়ন রাত৷ অর্থাৎ জার্মানিও ভ্রমণ করেছেন অনেক পর্যটক৷ সব মিলিয়ে গতবছরটা তাই পর্যটকদের জন্য ভালোই ছিল৷ ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগাম বুকিং না দিলেও শেষ মুহূর্তে জার্মান পর্যটকরা ঠিকই বেরিয়ে পড়বেন ভ্রমণে৷
নিরাপত্তার পাশাপাশি শরণার্থী সংকটও পর্যটন খাতকে শঙ্কায় ফেলছে৷ কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এর ফলে যদি সেনজেন সুবিধা, অর্থাৎ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ভিসা ছাড়াই যাতায়াতের সুবিধা কমে যায় বা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে তা পর্যটনখাতের জন্য হবে এক ধরনের বিপর্যয়৷ জার্মান পর্যটন শিল্পের কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মিশায়েল ফ্রেন্সেল এই বিষয়ে বলেন, ‘‘আমরা ভ্রমণের স্বাধীনতা রক্ষায় সীমান্তে কড়াকড়ির বদলে সকল রাজনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে৷ কেননা সীমান্তে কড়াকড়ি শুধু সামগ্রিক অর্থনীতি নয়, বিশেষভাবে পর্যটন খাতের জন্য ক্ষতিকর হবে৷''
উল্লেখ্য, বার্লিনের পর্যটন মেলা পঞ্চাশতম বার্ষিকী পালন করছে চলতি বছর৷ বিশ্বের ১৮০টি দেশের এবং অঞ্চলের দশ হাজার প্রদর্শক মেলায় রয়েছে৷