দুর্যোগের ক্ষতিপূরণ কে দেবে?
৯ নভেম্বর ২০১৭বাংলাদেশ সহ কয়েকটি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী না হলেও এর কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ অতিবৃষ্টি, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরাসহ নানান দুর্যোগের মুখে পড়ছে দেশগুলো৷ প্রতিটি দুর্যোগের পর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রতিটি দেশকে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোর প্রশ্ন হচ্ছে, শিল্পোন্নত দেশগুলো যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মূলত দায়ী, তাই তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত৷ এই লক্ষ্যে ২০১৩ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ' নামে একটি মেকানিজম গড়ে উঠে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত দেশগুলো এর বিরোধিতা করে আসছে৷ কারণ এতে সমর্থন দিলে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে এই আশংকায় আছে দেশগুলো৷
বাংলাদেশের ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট' এর পরিচালক সালিমুল হক রয়টার্সকে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করায় অগ্রগতি সামান্য৷
অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল হেড অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বলেন, ‘‘লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য এখনও কোনো তহবিল নেই – এটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ৷''
দুর্যোগের পর ব্যয় মেটাতে উন্নত দেশগুলো দরিদ্র দেশগুলোকে বিমা সহায়তা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে৷ এতে করে দুর্যোগের পরপরই প্রাথমিক খরচ মেটানো সহজ হবে বলে মনে করছে উন্নত দেশগুলো৷ জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল বলছেন, ‘‘ক্ষতির পুরোটা বিমা দিয়ে পোষানো যাবেনা৷ তবে বিমার টাকা দিয়ে পুনর্গঠন কাজ শুরুর আগে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে দেশগুলো৷ কারণ বিমার টাকা পাওয়ার প্রক্রিয়াটা দ্রুত৷ দাতাদের উপর বসে থাতে হয় না৷''
তবে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, ভর্তুকি না দিলে দরিদ্র দেশের পক্ষে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দেয়া সম্ভব হবে না৷ তাছাড়া দুর্যোগের কারণে যে অনেক সময় পারিবারিক ফটো নষ্ট ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে যায়, সেসবের ক্ষতি অর্থ দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়৷ তাছাড়া যেসব দুর্যোগ অনেকদিন ধরে ঘটে, যেমন খরা, তার ক্ষতিপূরণ বিমার আওতায় পড়বে না৷
এদিকে বিমা ছাড়াও ক্ষতিপূরণের উৎস হিসেবে আরও কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ যেমন জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানি, এয়ারলাইন্স ও শিপিং কোম্পানির উপর কর নির্ধারণ; বৈশ্বিক কার্বন কর এবং আর্থিক লেনদেনের উপর কর বসানো ইত্যাদি৷
২০৩০ নয়, ২০২০ এর আগেই
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বেশিরভাগ দেশের সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে৷ তবে বনের জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেয়া উত্থানশীল দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ২০২০ সালের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু করতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন৷
জেডএইচ/ডিজি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন, রয়টার্স)
বন্ধু, প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানান, লিখুন নীচের ঘরে৷