জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ চেহারা ইউএন রিপোর্টে
২৭ অক্টোবর ২০২১সামনেই জলবায়ু বৈঠক। পরিবেশ রক্ষায় নতুন টার্গেট স্থির হবে সেখানে। কিন্তু প্যারিস জলবায়ু বৈঠকে ১২০টি দেশ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। জাতিসংঘের রিপোর্টে তা স্পষ্ট। রিপোর্ট বলছে, বিশ্বজুড়ে দূষণের যে মাত্রা, তাতে এই শতাব্দীতে পৃথিবীর তাপমাত্রা দুই দশমিক সাত ডিগ্রি বাড়তে পারে। অথচ প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে ঠিক হয়েছিল, তাপমাত্রা এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির মধ্যে আটকে রাখতে হবে।
কেন এই বৃদ্ধি
রিপোর্ট বলছে, কার্বন ফুটপ্রিন্টই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ। তথ্য দিয়ে তাদের বক্তব্য প্রমাণ করা হয়েছে রিপোর্টে। বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের দূষণ সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ কমার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু প্যারিস সম্মেলনে স্থির হয়েছিল তা ৫৫ শতাংশ কমানো হবে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহু দূরে দাঁড়িয়ে আছে দেশগুলি। দ্রুত লক্ষ্যপূরণ করতে না পারলে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া এবং পরিবেশের অবস্থা আরো খারাপ হবে সচেতন করা হয়েছে রিপোর্টে।
বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করতে হলে প্রতি বছর গোটা পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ ২৮ গিগাটন কমাতে হবে। অর্থাৎ, প্রতিটি দেশকে বাৎসরিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ৩০ শতাংশ হারে কমাতে হবে।
জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত সংস্থার প্রধান ইংগার অ্যান্ডারসন বলেছেন, ''ঘড়ি অত্যন্ত দ্রুত চলছে। হাতে মাত্র আট বছর সময় আছে। এরমধ্যে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়িত করতে না পারলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহতার সামনে দাঁড়াতে হবে বিশ্বকে।''
প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য প্রতিটি দেশকে নিজের মতো টার্গেট তৈরি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি, তা এখন স্পষ্ট। এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এবারের সম্মেলনে কড়া ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুকোমুখি হতে হবে।
বস্তুত, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গোটা বিশ্বে এবছর তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। দাবানল, তাপপ্রবাহ, বন্যায় ক্ষতি হয়েছে অনেক। আবহাওয়ার খামখেয়ালি রূপ দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এই সমস্ত বিষয়গুলিকেই আলোচনায় রাখা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোভিড এবং আবহাওয়া
কোভিড এবং লকডাউনের ফলে গোটা বিশ্বেই আবহাওয়ার সামান্য উন্নতি দেখা গেছিল। কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বেশ খানিকটা কমেছিল। কিন্তু লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে সেই গ্রাফ ধরে রাখা যায়নি। ফের কার্বন নিঃসরণের গ্রাফ উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে। জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, লকডাউনের সময়ের গ্রাফ যদি বেধে ফেলা যেত, তাহলে পরিবেশের পক্ষে তা ভালো হতো।
জিনেটে সুইঙ্ক/এসজি