জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিপাইন্সের জেলে
১৯ মে ২০২১ফিলিপাইন্সের কামোটেস দ্বীপপুঞ্জে মাঝরাত থেকে বৃষ্টি পড়ছে৷ তাই নৌকা নিয়ে বের হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ ফলে জেলেদের মাথায় হাত৷ কোলিন সেরানিয়ানা ২৫ বছরেরও বেশি সময় থেকে মাছ ধরছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জেলেরা আবহাওয়ার পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করছি৷ পূবের দমকা বাতাস এতক্ষণে সরে যাওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সম্ভবত মার্চ মাস পর্যন্ত এই বাতাস বইতে থাকবে৷ গত বছর সেই সময়েই থেমেছিল৷ আবহাওয়া আর আগের মতো নির্দিষ্ট ধারা মানছে না৷''
সাধারণত জানুয়ারি মাসেই বর্ষার মরসুম শেষ হতো৷ ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের অন্যতম শুকনা মাস৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবকিছু বদলে গেছে৷ আবহাওয়ার উপর কড়া নজর রেখে জেলেদের সেই অনুযায়ী কাজ করতে হচ্ছে৷
কোলিন সেরানিয়ানার চার সন্তান৷ দুই জন বড় হয়ে নিজেদের পথ বেছে নিয়েছে৷ তার স্ত্রী জোসলিন জানালেন, মাছের জোগান কখনো কমে গেলেও তারা ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে পেরেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সমুদ্র থেকে আমরা যা পাই, তাই আমাদের খাদ্য ও আয়ের উৎস৷ সেই অর্থ দিয়েই সন্তানদের স্কুল-কলেজে পাঠাতে পেরেছি৷ তা নিয়ে আমার যথেষ্ট গর্ব রয়েছে৷ আমার স্বামী ও আমি কোনোদিন স্কুলে পড়ি নি৷ কারণ আমাদের সময়ে সেটা সম্ভব ছিল না৷''
বেলার দিকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলো৷ কোলিন দুটি বড় মাছ ধরলেন৷ তিনি রেড স্ন্যাপার মাছটি বিক্রি করবেন৷ সেটির ওজন পাঁচ কিলোরও বেশি৷
ভাগ্য ভালো থাকলে তিনি দিনে ১৫ কিলো মাছ ধরতে পারেন৷ পরিবারের জন্য সব সময় কিছুটা রেখে পাড়ার লোকের কাছে বাকিটা বিক্রি করা হয়৷
মহামারির আগে তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছে মাছ বিক্রি করতেন, যিনি পাইকারি বাজারে সরবরাহ করেন৷ তাতে মুনাফা হতো৷ কিন্তু আপাতত বাজার বন্ধ রয়েছে৷ প্রতিবেশীদের অত বেশি দাম দেবার সামর্থ্য নেই৷
জোসলিন বিক্রিবাটার হিসেব রাখেন৷ কিছু টাকা বেঁচে গেলে তিনি এক সেভিংস ক্লাবে সেগুলি জমা রাখেন৷ জোসলিন বলেন, ‘‘সেভিংস ক্লাব আমাদের কাছে ব্যাংকের মতো৷ আমাদের দ্বীপে কোনো ব্যাংক নেই৷ তাই আমরা এভাবে মানুষকে সঞ্চয় করতে শেখাই৷''
পিলারের বেশিরভাগ মানুষই পেশায় জেলে৷ সেখানে অন্য কোনো কাজের তেমন সুযোগ নেই৷ প্রায় চার বছর আগে স্থানীয় সেভিংস ক্লাব গঠন করা হয়েছিল৷
ইওয়াখিম এগার্স/এসবি