জরাজীর্ণ ভেদ করে চাকচিক্য
২৪ আগস্ট ২০১৪এতদিন পর্যন্ত গ্লাউখা এক সমস্যাকীর্ণ জায়গা বলে পরিচিত ছিল৷ জার্মানির স্যাকসনি আনহাল্ট রাজ্যের হালে শহরের অংশ এটি৷ বেকারত্ব ও ক্ষয়ে পড়া বাড়িঘরের ভারে জর্জরিত এক অঞ্চল৷ অন্তত কিছুদিন আগে পর্যন্ত৷ গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ এমনটি সম্ভব হয়েছে ‘সামাজিক শহর' প্রকল্প ও অসংখ্য ব্যক্তিগত উদ্যোগের মাধ্যমে৷
অবস্থা ছিল শোচনীয়
হালে শহরের ঊনবিংশ শতাব্দীর পুরানো বাড়িগুলির অবস্থা ছিল শোচনীয়৷ যুদ্ধের ধকল সামলে উঠলেও কমিউনিস্ট আমলে ধসে পড়ে সেগুলি৷ পুনরেকত্রীকরণের পরপরই নতুন মালিকদের পক্ষে বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে পুনর্গঠন করা সম্ভব ছিল না৷ আর তাই হালে সেই সময় ১০০,০০০ বাসিন্দা হারায়৷
এখন অবশ্য গ্লাউখাতে ৪০০০ মানুষ বসবাস করেন৷ ৬০ শতাংশ বাড়ি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন৷ অনেক বছর ধরে এখানে বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও অভিবাসীরাই বসবাস করতেন৷ অনেক বাড়ি খালি পড়ে ছিল৷ উদ্যোগী নাগরিকরা এই পরিস্থিতি বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন৷ ২৭টি বাড়ি সরকারি সহায়তায় পুনর্গঠন করা হয়৷ অঞ্চলটি আবার আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে৷ ইতোমধ্যে আরো ১৭টি বাড়ি সরকারি সাহায্য ছাড়াই মেরামত করা হয়েছে৷ এখন অল্পবয়সিরাও বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে আবার শহরটিতে থিতু হচ্ছেন৷
‘সামাজিক শহর' প্রকল্প
জার্মান সরকার গ্লাউখার মতো অন্যান্য শহরেও সহায়তা করছে৷ ‘সামাজিক শহর' কর্মসূচির জন্য সরকারি অনুদান ৪০ মিলিয়ন থেকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত করা হয়েছে৷ সারা জার্মানিতে এই ধরনের ৫৮০ প্রকল্প রয়েছে৷ জার্মান নির্মাণ মন্ত্রণালয়ের উলরিশ হাটৎসফেল্ড এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা আশেপাশের পরিবেশের উন্নয়ন করি, মালিকদের বিনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করি৷ এরপর আমরা আশা করি যে, প্রকল্পটি তার নিজস্ব গতিতে চলবে৷ গ্লাউখার-এর ক্ষেত্রে তা কার্যকর হয়েছে৷''
কোনো বাড়ির মালিক যদি মেরামতে টাকা ঢালতে রাজি না হন, তাহলে তাঁকে বাড়িটি বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ শিল্পীদেরও উদ্বুদ্ধ করা হয় শহরের সৌন্দর্য বর্ধনে অংশ নিতে৷ এর ফলাফলও দেখা গিয়েছে৷
শিল্পীরাও এগিয়ে এসেছেন
আলোকচিত্রশিল্পীরা গ্লাউখার বাসিন্দাদের এলাকার পটভূমিতে ছবি তুলে বড় করে রাস্তার ধারে সাজিয়ে রেখেছেন৷ বাড়ির মালিকরা মেরামতে বিনিয়োগ করছেন৷ এইভাবে গ্লাউখা ইতিবাচক আলোকে আসতে পেরেছে৷
তবে শহরের ভাঙাচোরা ফুটপাথ ও রাস্তাঘাটের দিকেও নজর দেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে৷ সবুজ দেখা যায় খুব কমই৷ এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত গেরনোট লিন্ডেমান বলেন, ‘‘আমরা শুরু করার আগে খালি বাড়িঘরের পরিমাণ ছিল ৩০ শতাংশ, এখন মাত্র ৮ শতাংশ৷ এছাড়া এখন আমাদের আরো বেশি বাচ্চাদের ডেকেয়ার সেন্টার ও গাছগাছালি প্রয়োজন৷''
শুধু একটাই চিন্তা রয়ে গিয়েছে: পুরানো বাড়িঘরগুলি নতুন চাকচিক্য পেলে বহুদিনের বাসিন্দাদের কী হটিয়ে দেওয়া হবে? ‘‘এখন পর্যন্ত নয়'', বলেন উদ্যোক্তারা৷ বাড়িভাড়া যাতে সাধারণের আয়ত্তের মধ্যে থাকে, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে৷