জনসনকে না আসার অনুরোধ ভারতীয় কৃষকদের
২৩ ডিসেম্বর ২০২০মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকরা। এ বার আর মোদী সরকার বা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন নয়, কৃষক নেতাদের আর্জি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে নির্বাচিত শিখ সদস্যদের মাধ্যমে তাঁরা জনসনকে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে না আসেন। জনসন এ বার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি। মোদী সরকারের আমন্ত্রণ স্বীকার করে তিনি ওই দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লি আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কিন্তু তাঁর এই আসা নিয়ে সামান্য হলেও একটা সংশয় দেখা দিয়েছে। কৃষকরা ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিবের কাছে চিঠি দিয়ে এই অনুরোধ করেছেন। তার উপর পার্লামেন্টের শিখ সদস্যদেরও অনুরোধ করা হয়েছে, বিষয়টি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলতে। ঘটনা হলো, গত সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ উঠেছিল। তুলেছিলেন পার্লামেন্টের শিখ সদস্য তনমনজিৎ সিং ধেসি। তিনি বরিস জনসনকে প্রশ্ন করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কি আমাদের উদ্বেগের কথা এবং কৃষক সমস্যার দ্রুত সমাধানের অনুরোধ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন?
জনসন অবশ্য উল্টো জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যা হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগের। কিন্তু এটা ওই দুই দেশের বিষয়। দুই দেশের সরকারের উচিত, সমস্যার সমাধান করা। কৃষকদের প্রসঙ্গে এই ভাবে পাকিস্তানকে টেনে আনার পর সামাজিক মাধ্যমে জনসনকে নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ কম হয়নি। তবে বিষয়টি গুলিয়ে ফেলায় তিনি প্রশ্নের ঠিক জবাব দিতে পারেননি। তাই কৃষক আন্দোলন নিয়ে তাঁর মতও জানা যায়নি।
কিন্তু গত সপ্তাহে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব যখন আগামী ২৬ জানুয়ারি জনসনের ভারতে আসার কথা ঘোষণা করেন, তখন তিনি বলেছিলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে তিনি কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তখন তিনি বলেছেন, 'আপনাদের রাজনীতির' সঙ্গে 'আমাদের রাজনীতিরও' কিছুটা মিল আছে। কারণ, ব্রিটেনে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা যথেষ্ট। রাব যা বলেননি, তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তা হলো, ভারতীয় মূলের ভোটব্যাঙ্ককে তাঁরাও চটাতে চান না।
কাকতালীয় হলেও ঘটনা হলো, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, করোনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁদের মত হলো, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যেন এখন বাইরের দেশে সফর না করেন।
তবে প্রজাতন্ত্র দিবসের ক্ষেত্রে এখনো একমাসের বেশি সময় আছে। ততদিনে পরিস্থিতি বদলাতেই পারে। তবে কৃষকদের আশা, জনসন তাঁদের অনুরোধে সাড়া দেবেন।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)