জনশক্তি রপ্তানি
৯ এপ্রিল ২০১৩মালয়েশিয়ায় নতুন করে জনশক্তি রপ্তানি নিয়েই বিরোধের শুরু৷ বেশ কয়েক বছর সে দেশে জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ থাকার পর আবার নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সরকারি উদ্যোগে সেখানে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করে৷ অভিযোগ, বেসরকারি পর্যায়ে প্রতারণা এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কারণে বিদেশে যেমন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, তেমনি সাধারণ মানুষও বিদেশে যেতে ভিটেমাটি বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়৷
কিন্তু বায়রা শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছিল৷ তাদের কথা, এ পর্যন্ত বিদেশে যত শ্রমিক গেছে, তার ৯৯ ভাগই গেছে তাদের মাধ্যমে৷ সরকারের প্রতিষ্ঠান বোয়েসেলের মাধ্যমে গেছে শতকরা মাত্র ১ ভাগ৷ তাদের এই অবদানের স্বীকৃতি না দিয়ে তাদের উল্টো অপবাদ দেয়া হচ্ছে৷ আর মালয়েশিয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নারী শ্রমিক পাঠানোর ব্যাপারেও তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়নি৷
মালয়েশিয়ায় প্রথমবার শ্রমিক যাওয়ার কথা ছিল ২৭শে মার্চ৷ কিন্তু তা সম্ভব হয়নি৷ বায়রার মহাসচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা আগেই বলেছিলেন তাঁদের ছাড়া মালয়েশিয়ায় বিপুল পরিমাণ জনশক্তি পাঠান সম্ভব নয়৷ কারণ সরকারের সেই লোকবল এবং সুবিধা নেই৷ তিনি বলেন, সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিক পাঠানোর নিবন্ধন শুরু হলেও তাদের কাজে লাগানো হচ্ছেনা৷ তাই তাঁরা সোমবার থেকে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর সব ধরনের কাজ বন্ধ রেখেছেন৷ তাঁদের ১,২০০ রিক্রুটিং এজেন্ট তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জনশক্তি রপ্তানির কাজ করবেন না৷ বেসরকারি খাতকে যেহেতু সরকারের প্রয়োজন নেই তাই সরকার একাই করুক৷ মহাসচিবের দাবি, সরকার কতটুকু সফল হবে তা দেখা যাবে৷ এরই মধ্যে তারা মালয়েশিয়ায় নির্ধারিত সময়ে লোক পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে৷
জবাবে প্রবাসীকল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বায়রার কিছু সদস্যের কারণেই অতীতে বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ তারা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে৷ এ কারণে মালয়েশিয়ার সরকারই আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লোক নিতে আগ্রহী নয়৷ আর সেজন্যই সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লোক পাঠান হচ্ছে৷ তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, এ দাবি সঠিক নয়৷ ২৭শে মার্চ লোক পাঠান যায়নি তবে চলতি মাসেই পাঠান যাবে৷
তিনি দাবি করেন, ধর্মঘট ডেকে বায়রা ভাঁওতাবাজি করছে৷ তারা বেশি পয়সা নিয়ে লোক পাঠানোর সুযোগ না পেয়ে এখন এসব করছে ৷ মন্ত্রী দাবি করেন, এতে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোয় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বেনা৷
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি বড় খাত হল প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ৷ মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ৬০টি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ করেন৷ গত বছর তারা ১৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি মুদ্রা পাঠিয়েছেন৷ আর এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৮.৫ মিলিয়ন শ্রমিক গেছেন বিদেশে৷