জঙ্গিবাদ ঠেকাতে বাংলাদেশের দিকে ইইউ-র সতর্ক নজর
২১ মার্চ ২০১০সাক্ষাৎকারটিতে ইইউ-র এই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ইউরোপে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনার বিষয়টিও তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, ‘ইউরোপে এই মুহূর্তে কোন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা না ঘটলেও তার অর্থ এই নয় যে এরকম কোন হুমকি নেই৷ উদ্বিগ্ন হওয়ার মত অনেক কারণই রয়েছে৷ বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী গ্রুপ তাদের লোক জোগাড় করতে ব্যস্ত রয়েছে৷' এক্ষেত্রে জার্মানির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন গিলস দ্য কেরচোভ৷ তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য জার্মানি থেকে যে পরিমাণ লোক দেশের বাইরে গিয়েছে তা এড়িয়ে যাওয়ার মত নয়৷ ধর্মান্তরিত অনেক মুসলমান জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে৷ একই সঙ্গে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোমালিয়ার মত দেশেও জঙ্গি দলগুলো সংগঠিত হচ্ছে৷'
ইয়েমেন ও বাংলাদেশের কথা তুলে ধরে কেরচোভ বলেন, ‘এই দুটি দেশের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন৷' বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানে কিছু ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেবল আরবি ভাষায় পবিত্র কুরান শিক্ষা দেওয়া হয়, অন্য কিছু নয়৷ ফলে শিক্ষার্থীরা পরে আর চাকরি পায় না৷ আমাদের উচিত এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করা৷' অর্থাৎ শিক্ষা ও চাকরির সীমাবদ্ধতার সুযোগে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে জঙ্গি দলগুলো কাজে লাগাতে না পারে সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন ইইউর সন্ত্রাস বিরোধী বিভাগের সমন্বয়ক কেরচোভ৷ তিনি বলেন, এজন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার যাতে তাদের জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করতে পারে সেজন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগ নেওয়া উচিত৷ একই সঙ্গে এসব দেশগুলো যাতে তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে পারে সে ব্যাপারেও আমাদের উচিত তাদের সাহায্য করা, বলেন কেরচোভ৷
উল্লেখ্য, বিগত জোট সরকারের আমলের শেষ দিকে বাংলাদেশে ধর্মীয় জঙ্গি দলগুলো প্রকাশ্যে সহিংস তৎপরতা শুরু করে৷ তবে সরকারের কঠোর মনোভাব ও জনসমর্থন না থাকায় এসব জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা পরে ধরা পড়ে৷ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়৷ বর্তমান সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও জঙ্গিবাদ দমনে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই