‘ছুটা’ কাজ: বিপর্যয়ে জার্মানির বড় হাতিয়ার
৩১ মার্চ ২০২০হাতিয়ারের জার্মান নাম 'কুরৎসআরবাইট’৷ এর অর্থ ‘শর্ট টাইম ওয়ার্ক' বা খণ্ডকালীন কাজ৷ বিশেষ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যখন কর্মীদের নিরাপদে কর্মস্থল থেকে বাড়ি পাঠাতে অথবা পর্যাপ্ত কাজ দিতে ব্যর্থ হয়, তখন সেরকম প্রতিষ্ঠানের পাশে দাঁড়াতেই কাজে লাগে এই ‘কুরৎসআরবাইট' স্কিম৷ কেউ যাতে বিনা দোষে বেকার না হয়, কোনো কোম্পানি যাতে দক্ষ কর্মী না হারায়, সেই জন্য আপৎকালে কর্মীদের বেতনের শতকরা ৬০ ভাগ দিয়ে দেয় সরকার৷ ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীর সন্তান-সন্ততি থাকলে ওই সময় তিনি সরকারের কাছ থেকে পান বেতনের ৬৭ ভাগ৷ দুঃসময় কেটে গেলে আবার তারা ফিরে যেতে পারেন কর্মস্থলে৷ সাময়িক বিপর্যয় কাটিয়ে ধীরে ধীরে আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে অর্থনীতি৷
২০০৮-০৯ সালে বিশ্বের অনেক দেশ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়লেও এই ক্রিম ব্যবহার করে বিপর্যয় এড়াতে পেরেছিল জার্মানি৷ তখনমোট ১৫ লাখ কর্মীকে কুরৎসআরবাইটগেল্ড, অর্থাৎ বিশেষ পরিস্থিতিতে খণ্ডকালীন কাজের টাকা দিয়েছিল সরকার৷
করোনা সংকটেও একই হাতিয়ার
করোনা ভাইরাসের কারণে গত ৮ মার্চ মার্চ থেকে জার্মানিও খুব সতর্কাবস্থায়৷ বাইরে চলাচলে রয়েছে বিধি-নিষেধ৷ ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা প্রায় বন্ধ৷ এ অবস্থায় কুরৎসআরবাইট স্কিমকে আরো বেশি কোম্পানির কাছে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ নিয়ম করা হয়েছে সহজ৷ আগে কোনো কোম্পানির অন্তত ৩০ভাগ কর্মী সমস্যায় পড়লে সহযোগিতার হাত বাড়াতো সরকার, এবার দশভাগ কর্মীর কাজ আশঙ্কার মুখোমুখি হলেই এই স্কিমের আওতায় আসতে পারবে৷
ফলে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রতিষ্ঠান এই সুযোগের জন্য আবেদন করেছে৷ প্রথম সপ্তাহে জমা পড়েছে ৭৬ হাজার আবেদন৷ সপ্তাহে এত বেশি আবেদন আগে কখনো জমা পড়েনি৷ গতবছর যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের সময় সপ্তাহে জমা পড়েছিল ৬০০ আবেদন৷ নিয়ম অনেক শিথিল করায় আবেদন যে অনেক বাড়বে তা বোঝা যাচ্ছিল৷ এই খাতে সরকারের খরচ বেড়ে যাওয়াও ছিল অনিবার্য৷
ধারণা করা হচ্ছে, এবার প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ কর্মীকে কুরৎসআরবাইটগেল্ড দিতে অন্তত ১০ বিলিয়ন ইউরো খরচ হবে জার্মান সরকারের৷
সীমাবদ্ধতা
বড় বড় অর্থনৈতিক বিপর্যয় সামাল দেয়ায় কার্যকর ভূমিকা রাখলেও কুরৎসআরবাইট স্কিম একেবারে নিখুঁত নয়৷ রেস্তোরাঁ এবং ছোট ছোট দোকানের কর্মীরা এই স্কিমের আওতায় আগে খুব বেশি আসতে পারেননি৷
আর্থার সুলিভান/ এসিবি
২০১৭ সালর ছবিঘরটি দেখুন...