1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাদকৃষি: প্রয়োজন এখন সুষ্ঠু পরিকল্পনা

১৫ অক্টোবর ২০১৮

বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় বাসার ছাদে বাগান দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ ছাদে এখন শুধু ফুল নয়, শাকসবজি, ফলমূল সবই হচ্ছে৷ বাণিজ্যিক না হলেও শখের এই বাগানে বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা৷

https://p.dw.com/p/36URm
Bangladesh Dhaka Dachgarten
ছবি: DW/M. M. Rahman

নাসিরুল ইসলাম থাকেন মিরপুরে৷ তিনি তাঁর পাঁচতলা বাসার ছাদে বাগান শুরু করেছেন তিন বছর আগে৷ বাগানের আয়তন ১,৪০০ বর্গফুট৷ মৌসুমি সবজি ছাড়াও তিনি আম চাষে রীতিমতো সাফল্য দেখিয়েছেন৷

আম রয়েছে নানা জাতের, নানা দেশের৷ বাহারি সব আমের কারণে প্রতিবেশীদের মধ্যে তাঁর সুনামও ছড়িয়ে পড়েছে৷ গত মৌসুমে অনেকই তাঁর ছাদবাগানের আম দেখতে গেছেন৷ প্রতিবেশীদের সাধ্যমতো বাগানের আম খেতেও দিয়েছেন নাসিরুল৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘গত মৌসুমে এত আম হয়েছে যে, আমাকে আর বাজার থেকে আম কিনতে হয়নি৷ আমার বাগানে থাইল্যান্ডসহ নানা দেশের, নানা জাতের আম গাছ আছে৷ আমি মাল্টা এবং কমলাও ফলিয়েছি আমার বাগানে৷''

ছাদে বাগান করার এই শখ এসেছে হতাশা থেকে৷ নাসিরুলের বাড়িটি বহুতল করার আগে এখানে আম কাঁঠালসহ নানা ধরনের সবজি চাষ হতো৷ বাচ্চারা খেলতে পারতো৷ বাড়ি করার কারণে সেই সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়৷ সেখান থেকেই নাসিরুল ছাদে বাগান করার পরিকল্পনা নেন৷

নাসিরুল ইসলাম

তাঁর বাগানে শীতের সবজির চাষ হয়েছে৷ ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লাউ, ধনে পাতা, লেটুস পাতা, মরিচ ইত্যাদির চাষ করেন তিনি৷ এছাড়া মরিচ তাঁর বাগানে বারো মাসই হয়৷ চাষ হয় ক্যাপসিকামের৷

যে মৌসুমে যে ধরনের শকসবজি হয় সেই মৌসুমে তা-ই চাষ করেন নাসিরুল৷ তিনি বলেন, ‘‘শাকসবজিও আমার কিনে খেতে হয় না৷ বরং প্রতিবেশীদের দিতেও পারি৷ এবার প্রচুর পুঁই শাক হয়েছিল৷ অনেককেই দিয়েছি৷''

নাসিরুল টিনের ড্রাম আর প্লাস্টিকের কন্টেনারে গাছ লাগান৷ প্রয়োজনীয় পরামর্শ নার্সারি থেকেই পেয়ে থাকেন৷ নার্সারিতে পরিচর্যার লোকও পাওয়া যায়৷ এছাড়া তিনি নিজেও বাগান পরিচর্যায় সময় দেন৷ তিনি জানান, ‘‘বাগান শুরু করার সময় যা খরচ হয়, এরপর আর তেমন খরচ নেই৷ আমার মাসে এক হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না৷ আমি চাষ করি অর্গানিক উপায়ে৷ কোনো কৃত্রিম সার বা কীটনাশক ব্যবহার করি না৷''

মল্লিকের ফল বাগান

ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের শহরগুলোতে এরকম ছাদবাগানের সাফল্যের অনেক গল্প এখন পাওয়া যায়৷ ছাদে এখন প্রায় সব কিছুরই চাষ হয়৷ এমনকি ধান চাষেও সাফল্য দেখিয়েছেন কেউ কেউ৷ ছাদে পানির চৌবাচ্চা করে জলজ উদ্ভিদ আর শাপলা, পদ্ম ফুটিয়েছেন কেউ কেউ৷ কেউ আবার পুরো ছাদটিকেই পরিণত করেছেন ফলের বাগানে৷ সেরকমই একজন হলেন ঢাকার বাসাবোর এহতেশামুল হক মল্লিক৷ তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক৷ তিনি তাঁর বাড়ির চারতলার কিছু অংশ এবং পাঁচতলার ছাদ মিলিয়ে ১৬শ' বর্গফুটের ফল বাগান গড়ে তুলেছেন৷ মাঝেমধ্যে অবশ্য সেখানে সবজিও চাষ করেন৷ তাঁর বাগানে পেয়ারা, কলা, কামরাঙা, আনার, সফেদা, মাল্টা, তেঁতুল, আনারস, ড্রাগন, ডুমুর, অরবড়ই, আমড়া, কদবেল ইত্যাদি ফলানো হয়৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘২০০০ সালে আমি প্রথম ছাদে ফুল চাষ শুরু করি৷ আমার স্ত্রী-ই গোলাপসহ নানা ধরনের ফুল গাছ লাগাতেন৷ এরপর আমার সবজি ও ফল চাষে আগ্রহ হয়৷ কিন্তু প্রথমে নার্সারি থেকে যে চারা কলম আনতাম তা ভালো হতো না৷ দুই বছরেও ফল আসতো না৷ এরপর রামপুরার একজন ছাদবাগানি টিপু সুলতান খানের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়৷ তিনি এখন আর নেই৷ তিনিই আমাকে ছাদে চাষের উপযোগী চারা ও বীজ দেন৷ তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি৷ নানা ফল দিয়ে আমার বাগান ভরিয়ে তুলেছি৷''

এহতেশামুল হক মল্লিক

মল্লিক বলেন, ‘‘আমার তেমন কোনো ফল কিনে খেতে হয় না৷ সারাবছরই আমার ছাদের বাগানে কোনো-না-কোনো ফল থাকে৷ আমার কলিগরা আসেন, বন্ধুবান্ধব আসেন৷ তাঁদের নিয়ে ছাদে নানা অনুষ্ঠানও করি৷ গাছের ফল গাছ থেকেই পেড়ে তাঁদের খেতে দেই৷ এ এক অন্যরকম আনন্দ৷''

এহতেশামুল হক মল্লিক একটি ওয়েবসাইটও খুলেছেন৷ সেখানে তাঁর বাগানের ছবি, ফলের ছবি, বাগান নিয়ে লেখা আছে৷ আর যাঁরা ছাদবাগান করতে চান, তাঁদের পরামর্শ ও তথ্য সহায়তাও দেন তিনি৷

শুরুর কথা

বাংলাদেশে ছাদবাগানের পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয় রামপুরার টিপু সুলতান খানকে৷ তিনি গড়ে তুলেছিলেন ‘গ্রিন রুফ মুভমেন্ট' নামে একটি সংগঠন৷ তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারী গোলাম হায়দার ওই সংগঠনের দায়িত্ব নেন৷ তিনি একজন প্রকৌশলী হলেও ছাদবাগান থেকে এখন কৃষিকেই তাঁর পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমি ছাদবাগান শুরু করি ৩০ বছর আগে৷ তারও আগে কাজ শুরু করেন টিপু সুলতান খান৷ তিনিই সংগঠনটি গড়ে তোলেন৷ আমরা সভা-সেমিনার করেছি৷ লিফলেট বিতরণ করেছি ছাদবাগানের জন্য৷ কিন্তু আমরা বিপ্লব ঘটে গেছে বলে মনে করলেও আসলে তা নয়৷ ঢাকায় যত ছাদ আছে তার মাত্র পাঁচ ভাগে বাগান আছে৷ তবে উৎসাহ বাড়ছে৷ আমরা বলি, ছাদকে সবুজ করেন৷ সেটা শাকসবজি বা ফলের চাষ, ফুল গাছ লাগানো বা যে-কোনো ধরনের প্ল্যান্টেশনের মাধ্যমে হতে পারে৷ সাধারণভাবে বলা হয়, এটা করলে অক্সিজেনের ঘাটতি দূর হবে, কার্বন ডাই-অক্সাইড কমবে৷  বাড়িকে শীতল রাখবে৷ কিন্তু এর বাইরেও আমরা যেটা বলি, শহরে ছাদবাগান যত বাড়বে, তত শিক্ষিত কৃষক তৈরি হবে৷ আর ছাদবাগানের আগ্রহ মানুষকে কৃষিতে দক্ষ করবে৷''

গোলাম হায়দার

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সব শহর মিলিয়ে ১০ লাখেরও বেশি ছাদ আছে৷ এ ছাদগুলো চাষাবাদের আওতায় আনলে বছরে একটা ছাদ থেকে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকার সবজি পাওয়া সম্ভব৷ আমরা বলি, বাংলাদেশের মোট ছাদের আয়তন একটি জেলার আয়তনের সমান৷ আর ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ মানুষ নগরে বাস করবে৷ তাই নগরের ছাদকে ব্যবহার করতে হবে কৃষি উৎপাদনে৷ সারা পৃথিবীতেই ছাদে চাষ পদ্ধতি জনপ্রিয় করার কাজ চলছে৷ ভিয়েতনামের সবজি চাষের ৫০ শতাংশ হয় ছাদে৷ টোকিও শহরে ছাদে ২৫ শতাংশ বাগান করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ আমাদের এখানেও সরকারি প্রণোদনা এবং উদ্যোগ প্রয়োজন৷''

গোলাম হায়দার ছাত্র অবস্থায় কাজি পেয়ারার একটি গাছ লাগানোর মাধ্যমে ছাদবাগান শুরু করেন৷ এখন মূলত তিনি তাঁর রামপুরার ছাদবাগানকে বিভিন্ন ফল, সবজি, শাক, ফুলের জাত সংরক্ষণের বাগানে পরিণত করেছেন৷ তিনি জানান, ‘‘আমার বাগানে আমই আছে ৩৫ জাতের৷ আমার ছাদে ওষধি গাছ আছে, ক্যাকটাস আছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমি পেশায় এখন নগরের কৃষক৷ আমার এর বাইরে কৃষিখামার আছে, নার্সারি আছে৷ আমি বাগান করতে পরামর্শ দেই, প্রচার চালাই, উদ্বুদ্ধ করি৷''

প্রয়োজন পরিকল্পনা

স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বের হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি জাপানে দেখেছি ৫৪ তলার উপরে বিরাট গার্ডেন৷ সিঙ্গাপুরেও দেখেছি পাঁচটি ভবনের ছাদকে সংযুক্ত করে বাগান তৈরি করা হয়েছে৷ এখন তাই আমাদের দরকার পরিকল্পনা৷ ভবন তৈরির সময় ছাদবাগানের পরিকল্পনা করে নকশা করতে হবে৷ এমনকি পুরো ভবনের ফাঁকে ফাঁকে বাগান করা যায়৷ পরিকল্পনা না করলে ছাদবাগান টেকসই না-ও হতে পারে৷ কারণ, ছাদ একটু দুর্বল হয় অন্যান্য ফ্লোরের চেয়ে৷ কিন্তু ছাদবাগান করতে হলে ছাদের লোড নেয়ার ক্ষমতা বাড়াতে হবে৷ বিশেষ করে পুরনো ভবনে করলে নতুনভাবে ছাদের শক্তি বাড়াতে হবে৷ এ ব্যাপারে রাজউকের এখনই উদ্যোগ নেয়া দরকার৷''

মোবাশ্বের হোসেন

তিনি বলেন, ‘‘ছাদে বড় গাছও লাগানো যায়৷ কিন্তু বাতাস বা ঝড়ের সময় সেটা ছাদে চাপ সৃষ্টি করে৷ ডালপালা ভেঙে সড়কে পড়তে পারে৷ কিন্তু পরিকল্পনা করে লাগালে কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই৷ আমরা ঢাকায় কিছু ভবন করেছি যেগুলোতে পুরো ভবনেই বাগান আছে৷''

মোবাশ্বের হোসেন আরো বলেন, ‘‘ছাদবাগানের বিপুল সম্ভাবনা আমাদের সামনে৷ তাই এর পরিচর্যা সম্পর্কেও আমাদের সচেতন হতে হবে৷ মনে রাখতে হবে, এডিস মশা কিন্তু পরিষ্কার পানিতে জন্মায়৷''

প্রণোদনা ছাড়াই এত দূর

বাংলাদেশে ছাদবাগানের প্রতি যে বিপুল আগ্রহ দেখা যাচ্ছে তাতে সরকারের প্রণোদনা নেই বললেই চলে৷ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ছাদবাগান করলে হোল্ডিং ট্যাক্সে শতকরা ১০ ভাগ রেয়াতের ঘোষণা দিয়েছে৷ তবে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এর জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ বা টেকসই প্রকল্প নেই৷

অধিদপ্তরের হর্টিকালচার বিভাগের পরিচালক মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ফাও-এর (জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা) উদ্যোগে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ছাদবাগান নিয়ে কিছু কাজ হয়েছে৷ দু'টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে৷ আমরাও প্রশিক্ষণ দিচ্ছি সীমিত আকারে৷ তবে এই খাতে বড় কোনো প্রকল্প বা অর্থ বরাদ্দ নেই৷ আমরা চেষ্টা করছি বড় একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে ছাদবাগানের প্রশিক্ষণ ও সম্প্রসারণের কাজ করতে৷''

মিজানুর রহমান

তিনি বলেন, ‘‘শাক-সবজি এবং ফলমূল চাষে ছাদবাগান বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে আসছে৷ অনেক ছাদ খালি পড়ে আছে৷ এখানে ছাদবাগান হলে উৎপাদন বেড়ে যাবে৷ আমরা সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবার পরিকল্পনা করছি৷''

‘অক্সিজেন ফ্যাক্টরি'

ঢাকার কল্যাণপুর কৃষ্ণচূড়া অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে ‘অক্সিজেন ফ্যাক্টরি' নামে একটি ছাদবাগান গড়ে তুলেছেন অডিও ভিজ্যুয়াল নিয়ে কাজ করা মিতুল-বিন্তি দম্পতি৷ ঔষধি, সবজি, মসলা, ফল কিংবা ফুল সবই আছে সেখানে৷

ঔষধির মধ্যে আছে থানকুনি, তুলসী, তিন রকমের পুদিনা, অ্যালোভেরাসহ অনেক কিছু৷ ফলের মধ্যে রয়েছে দুই রকমের আম, তিন রকমের পেয়ারা, মালবেরি, ড্রাগন ফ্রুট, থাই জামরুল, মাল্টা, লেবুসহ আরো অনেক ধরনের ফল গাছ৷ মসলার মধ্যে রয়েছে অরিগানো, দারুচিনি, কারিপাতা, তেজপাতা, চুই এবং পোলাও পাতা৷

রেবেকা সুলতানা বিন্তি

সবজির মধ্যে আছে ফুলকপি, চেরি টমেটো, স্কোয়াস, চায়না ক্যাবেজ, চায়না সুপারলিফ, চায়না লেটুস, বিভিন্ন ধরনের শাক, গাঁজর ইত্যাদি৷ আর জলাধার তৈরি করে তাতে ফুটিয়েছেন শাপলাসহ নানা জলজ ফুল, লাগিয়েছেন জলজ উদ্ভিদ৷ ছাদে সবুজ ঘাসের চত্বরও তৈরি করেছেন৷ আছে নানা ধরনের ফুল৷

রেবেকা সুলতানা বিন্তি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আট ও নয় তলার ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্টে আমি আমার বাগান সাজিয়েছি৷ কেউ সবজি করেন, কেউ ফুল৷ আমি সবকিছু রেখেছি৷ আমার বাগানের পাঁচটি ভাগ৷ একটি ভাগে স্থায়ী ফুল গাছ৷ আরেকটিতে মৌসুমি ফুল, সবজির জন্য আলাদা জায়গা৷ আর আছে ঔষধি কর্নার৷ আছে জলজ উদ্ভিদের জন্য জলাধার৷''

বিন্তির ভাষায়, ‘‘সবুজের সঙ্গে আমি বসবাস করতে চাই৷ সেভাবেই আমি আমার আবাসস্থল তৈরি করেছি৷ আমরা গ্রিন বাংলাদেশ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সবাইকে সবুজ বাংলাদেশের জন্য উদ্বুদ্ধ করছি৷''

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য