1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্র হত্যা নিয়ে ভারতে রাজনৈতিক চাপান-উতোর

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

দিল্লিতে পড়তে আসা অরুণাচল প্রদেশের এক ছাত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা করার প্রতিবাদে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে দিল্লি ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুব-ছাত্র সংগঠনগুলি৷ এই ইস্যুকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর৷

https://p.dw.com/p/1B2ag
বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীছবি: Reuters

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশের বছর ২০ বয়সের ছাত্র নিডো টানিয়াম৷ তিনি দিল্লি এসেছিলেন পড়াশুনা করতে৷ এক আপাত সাধারণ ঘটনায় দক্ষিণ দিল্লির লাজপতনগরে তাঁকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ এই ঘটনার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে রাজধানি দিল্লির ছাত্র-যুব সংগঠনগুলি৷ প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবং দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলি৷ তাঁদের অভিযোগ, এই হত্যার মূল কারণ বর্ণবিদ্বেষ৷ দিল্লিতে পড়তে আসা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায়ই এই বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়৷ মিছিলের স্লোগানে সেই প্রসঙ্গই উঠে আসে বারংবার৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর৷ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী আর সময় নষ্ট না করে বিনা ঘোষণায় সোজা প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন৷ বলেন, ভারতের সব নাগরিক সমান৷ অবশ্য রাহুলের এই পদক্ষেপ, ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের নির্ভয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে সামিল না হবার ভুল শোধরানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল৷ হালের নির্বাচনি ফলাফলে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, জনগণের কাছ থেকে ক্রমশই দূরে সরে যাচ্ছে কংগ্রেস৷ তাই নিডো টানিয়ার হত্যাকাণ্ডে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিতে চান রাহুল গান্ধী৷

Indien Politik Kongress Rahul Gandhi
কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীছবি: UNI

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, এটা নিছক একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ এর নেপথ্যে কাজ করছে উত্তর-পূরাঞ্চলীয় জনগোষ্ঠীর প্রতি মূলস্রোতের নাগরিকদের বিরূপ মানসিকতা৷ এর আগেও অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে৷ মনিপুরসহ উত্তর-পূর্বের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়তে বা চাকরির সন্ধানে রাজধানী দিল্লিতে এসে রাস্তাঘাটে, দোকানে বাজারে, হোস্টেলে কিংবা কর্মস্থলে বিরূপ আচরণ পেয়ে থাকে, যেন তাঁরা ভারতীয় নাগরিক নয়৷ তা না হলে নিডো টানিয়ার চুলের রং এবং চুলের স্টাইল নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করার কোনো কারণ নেই৷ ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে নিডো রেগে গিয়ে একটি দোকানের কাঁচ ভেঙে দিলে দোকানদার তাঁকে লোহার রড দিয়ে পেটায় এবং ক্ষতিপূরণ চায়৷ নিডো ক্ষতিপূরণ দিয়েও রেহাই পাননি৷ রাস্তায় আবার তাঁকে নৃশংসভাবে আক্রমণ করে ৫-৬ জন দুষ্কৃতিকারী৷ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই নিডো মারা যান৷ ছাত্র নেতা কর্মীরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করলে তিনিও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হবার তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কথা বলেন৷ নিডো হত্যাকাণ্ডের তদন্তে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন দিল্লি হাইকোর্ট৷ অবিলম্বে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন৷

এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্ডে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের অভিযোগের উপযুক্ত প্রতিকারের নিশ্চয়তা দেন৷ তাঁদের অভাব অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য এক বিশেষ কমিটি গঠন করার কথাও বলেন, যাঁর সদস্য হবেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের তিনজন প্রাক্তন আমলা৷ নড়েচড়ে বসেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর৷ তারপরই গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে৷ দলের আরো দু- তিনজন ফেরার৷ প্রথম দিকে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি, এমনটাই অভিযোগ ছাত্র নেতাদের৷ ছাত্র প্রতিনিধিদের প্রধান অভিযোগ কী? বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন, দোষী পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পুরো ঘটনার কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোকে দিয়ে তদন্ত করা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য